ভারতীয় কূটনীতিকরা 'উগ্রবাদে' জড়িত: কানাডা পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৫ই অক্টোবর ২০২৪ ১২:০৯ অপরাহ্ন
ভারতীয় কূটনীতিকরা 'উগ্রবাদে' জড়িত: কানাডা পুলিশ

কানাডার রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) সম্প্রতি একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, ভারত সরকারের এজেন্টদের বিরুদ্ধে কানাডায় গুরুতর অপরাধমূলক কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের তদন্তের ফলাফলে দেখা গেছে যে, কানাডায় ভারতীয় এজেন্টরা একটি সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে জড়িত। 


সোমবার (১৫ অক্টোবর) কানাডা ও ভারত উভয় দেশের ছয়জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করার পর এ সংক্রান্ত বিবৃতি প্রকাশিত হয়। এই উত্তেজনার মূল কারণ হলো জুন ২০২৩-এ কানাডায় খালিস্তানপন্থী নেতা হারদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ড। কানাডা অভিযোগ করেছে যে, এই হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের এজেন্টরা জড়িত, যা ভারত কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।


আরসিএমপি জানায়, গত কয়েক বছরে তারা একাধিক হত্যাকাণ্ড ও অপরাধমূলক সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করেছে এবং দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়, বিশেষ করে খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে "ডজনখানেক বিশ্বাসযোগ্য ও আসন্ন হুমকি" চিহ্নিত করেছে। 


২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরসিএমপি একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে, যা ভারতীয় এজেন্টদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে। তদন্তের ফলাফল থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারতীয় কূটনীতিকরা তাদের পদ ব্যবহার করে গোপন কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন। তারা তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিকে হুমকি দিতে বা চাপ দিতে বাধ্য করেছেন।


আরসিএমপি জানিয়েছে, তারা ভারতীয় কর্মকর্তাদের কাছে প্রাপ্ত প্রমাণ সরাসরি উপস্থাপন করেছে এবং সহিংসতার অবসানে সহযোগিতা চেয়েছে। তারা জনসাধারণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, "কানাডিয়ানদের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।"


এদিকে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই দক্ষিণ এশিয়ায় সক্রিয়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার তদন্তে উঠে এসেছে যে, ভারতীয় এজেন্টরা সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরপন্থী নেতাদের হত্যায় জড়িত ছিলেন। 


বিশেষ করে, ১৮ জুন ২০২৩-এ হারদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডের পর কানাডা ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। পাঞ্জাব থেকে আলাদা খালিস্তান রাষ্ট্রের পক্ষে প্রচার চালানো এই নেতা কানাডায় পৌঁছেছিলেন ১৯৯৭ সালে এবং ২০১৫ সালে কানাডিয়ান নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছিলেন। 


এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, কানাডা ও ভারতের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংকটের গভীরতা এবং এর পরিণতি কী হবে, তা নজর রাখছে আন্তর্জাতিক সমাজ।