বাংলাদেশের বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ওরফে এস আলম তার বিনিয়োগের ক্ষতি এবং সম্পদ জব্দের অভিযোগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার তার সম্পত্তি দখল করেছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করেছে।
১৮ ডিসেম্বর এস আলমের আইনজীবী প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল অ্যান্ড সুলিভান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য উপদেষ্টাদের কাছে একটি বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ পাঠিয়েছে। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয় মাসের মধ্যে সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক সালিশি কার্যক্রম শুরু হবে।
এস আলমের আইনজীবীরা ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় এই আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১-২৩ সালের মধ্যে এস আলম পরিবারের সদস্যরা সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং ২০২০ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, এস আলম পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে, তাদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং তাদের কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কোনো নোটিশ ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্ত শুরু করেছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এস আলম সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে অর্থ পাচার করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ওভার ইনভয়েসিং ও ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে দেশ থেকে বিশাল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
এস আলমের এই আইনি পদক্ষেপ অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে, কারণ সরকার বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, বাংলাদেশ হাইকোর্টে দায়ের করা দুর্নীতির এক মামলায় যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির ট্রেজারি মিনিস্টার এবং শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উঠে এসেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তার পরিবার ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে।
টিউলিপ সিদ্দিক এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস নোটিশের চিঠি দেখেছে এবং জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ড বিনিয়োগ চুক্তির অধিকার লঙ্ঘন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চায় না।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।