ভারতীয় ক্রিকেটের এক আক্ষেপের নাম বিনোদ কাম্বলি। ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে একই ম্যাচ দিয়ে নিজের আগমনের জানান দিয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও শুরুটা করেছিলেন দারুণ। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে নিজেই ধ্বংস করেছিলেন ক্যারিয়ার। অথচ আগমনের দিনগুলোতে তাকে শচীন টেন্ডুলকারের চেয়েও প্রতিভাবান বলে মনে করা হতো।
মদের প্রতি কাম্বলির ভালোবাসাটা একটু বেশিই ছিল। এ ভালোবাসা এক সময় ছাড়িয়ে যায় ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসাকেও। খেলার মাঠে যেখানে শৃঙ্খলাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে নিয়ম ভাঙতেই বেশি আগ্রহ ছিল তার। এমনকি মাঝেমধ্যে তো মদ্যপান করেই নেমে যেতেন ক্রিকেটের মাঠে। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান ক্রিকেটের ব্যাডবয় কাম্বলি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিড-ডের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় কাম্বলি জানান চমকে দেওয়ার মতো খবর। ম্যাচের আগের রাতে ১০ পেগ মদ পান করে পরের দিন সেঞ্চুরি করার কৃতিত্বও আছে তার।
তিনি জানান, খেলোয়াড়ি জীবনে একবার ম্যাচের আগের রাতে ১০ পেগ মদ্যপান করেছিলেন। কোচ ভেবেছিলেন পরের দিন ম্যাচের আগে তিনি হয়তো ঘুম থেকেই উঠতে পারবেন না। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে সে ম্যাচে তিনি সেঞ্চুরি করেন।
তবে এখন মদ্যপান ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই তার। তিনি বলেন, 'একটা নিয়ম-কানুন রয়েছে, যেটা সবাইকে মেনে চলতে হয়। যদি এমন নিয়ম থাকে যেটা তোমাকে নির্দিষ্ট একটা জিনিস করতে নিষেধ করে তবে সেটা মেনে চলাই উচিত। আমি মদ্যপান করাই তৎক্ষণাৎ ছেড়ে দেব যদি আমাকে সেটা করতে বলা হয়। আমার কোনও সমস্যা নেই। সত্যি বলতে আমি এই মুহূর্তে একজন সোশ্যাল ড্রিঙ্কার। কে পান করে না বলুন তো?'
বেহিসেবি জীবন কাটানো এই সাবেক তারকা এখন অর্থাভাবে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। মূলত অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটারদের বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া ৩০ হাজার রুপি পেনশনের টাকাতেই সংসার চলে তার। তবে মুম্বাইয়ের মতো ব্যয়বহুল এলাকায় এই টাকায় সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে তার জন্য। তাই এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি চাকরির আবেদন রেখেছিলেন তিনি। চাকরি পেতে তিনি মদের সঙ্গ ত্যাগ করতেই প্রস্তুত বলে জানান।
টেস্টে ভারতের পক্ষে সর্বকণিষ্ঠ ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড এখনও কাম্বলির দখলে। ১৯৯৩ সালে মাত্র ২১ বছর ৩২ দিন বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
এরও দুই বছর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে স্কুল ক্রিকেটে শচীনের সঙ্গে বিশ্বরেকর্ড জুটি গড়া এই ব্যাটার। ১৯ বছর বয়সে অভিষেক হওয়ার পর মাত্র মাত্র ১০ টেস্ট ও ১০৪ ওয়ানডে খেলার পরই থেমে যায় তার ক্যারিয়ার। ২৪ বছর বয়সে শেষবারের মতো টেস্ট খেলা কাম্বলি ১০ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৫৪ গড়ে করেছিলেন ১,০৮৪ রান। ১০৪ ওয়ানডেতে ২৪৭৭ রান আছে তার নামের পাশে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।