করোনায় ব্রিটেনে যমজ নার্স বোনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ২৫শে এপ্রিল ২০২০ ১২:২৪ পূর্বাহ্ন
করোনায় ব্রিটেনে যমজ নার্স বোনের মৃত্যু

মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে ব্রিটেনের পরিচিত মুখ দুই যমজ বোন মারা গেছেন। একই হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়েছে। দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তের পর তারা ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এই যমজ বোন দেশটির অনেক মানুষের কাছে ছিল পরিচিত মুখ। তাদের অপর এক বোন বিবিসিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত মঙ্গলবার সাউদাম্পটন জেনারেল হাসপাতালে মারা যান ৩৭ বছর কেটি ডেভিস। পেশায় তিনি ছিলেন নার্স। তার যমজ বোন এমাও ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত নার্স। তিনি স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালের দিকে একই হাসপাতালে প্রাণ হারিয়েছেন। গণমাধ্যমকে এই তথ্য দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও তাদের বোন জো ডেভিস।

জো ডেভিস বলেন, ‘তারা সবসময় বলতো তারা একসঙ্গে পৃথিবীতে এসেছে তারা একসঙ্গে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে চায়। তাদের দুজনের সম্পর্ক ছিল অসাধারণ। তারা একসঙ্গে বসবাস করতো। কিন্তু কিছুদিন ধরে তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল। অবশেষে সম্প্রতি তারা করোনায় পজিটিভ হওয়ার পর এই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

’তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে কতটা প্রিয় ছিল তা বর্ণনা করার কোনো ভাষা নেই। তারা সবসময় মানুষের সেবা করতে চাইতো। ছোটবেলা থেকেই তারা এমনভাবে তাদের পুতুলের যত্ন করতো দেখে মনে হতো যেন তারা ডাক্তার কিংবা নার্স। তার জীবনের সবটা সময় রোগীদের সেবায় ছিল নিবেদিতপ্রাণ। কোনো কমতি ছিল না।

’এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল সাউদাম্পটনের প্রধান নির্বাহী পলা হেড বলেন, ‌‌‘কেটির মতো একজন নার্স হতে সবসময় চান তার সহর্কমীরা। তিনি ছিলেন তেমন একজন। নার্সিং শুধু তার কাছে একটা চাকরি ছিল না, তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু ছিল।

’কেটি ডেভিস সাউদাম্পটন চিলড্রেন হাসপাতালে একজন নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে তাকে সাউদাম্পটন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই যমজ বোনের পরিবারের প্রতি তাদের সমবেদনা জানিয়েছেন।

দুই বোনের মৃত্যুতে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ সব স্বাস্থ্যকর্মী মূল ফটকের সামনে করতালির মাধ্যমে মানুষের সেবায় তাদের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়। প্রসঙ্গত, ব্রিটেনে করোনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন নার্স প্রাণ হারিয়েছেন। বিবিসি বলছে, দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় ১০২ জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।