মাদক নিরাময় কেন্দ্রে কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
এরফান হোছাইন. জেলা প্রতিনিধি (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: বুধবার ২৭শে নভেম্বর ২০১৯ ১১:০২ পূর্বাহ্ন
মাদক নিরাময় কেন্দ্রে কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

কুষ্টিয়ার মিরপুরে ‘সমর্পণ’ নামে একটি মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দাবি, ওই ছাত্র হৃদরোগে মারা গেছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হাত-পা বেঁধে তাকে পেটাচ্ছেন কয়েকজন, পরে তার শরীরে পুশ করা হচ্ছে ইনজেকশন। ওই ছাত্রের নাম কামরুজ্জামান ইমন (২৪)। সে মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাদেরপুল গ্রামের এজাজুল আজিমের ছেলে। রাজশাহী সিটি কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল সে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ইমনকে ১৯ নভেম্বর দুপুরে মিরপুর বিজিবি সেক্টর এলাকার ‘সমর্পণ মাদকাসক্তি, মানসিক চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে’ ভর্তি করা হয়। ‘মানসিক সমস্যাজনিত’ কারণে তাকে সেখানে নেয়া হয়েছিল। ভর্তি শেষে পরিবারের সদস্যরা ফিরে যান বাড়িতে। পরদিন সকালে পরিবারকে জানানো হয় ইমনকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। সেখানে বাবা-মা ও স্বজনরা গিয়ে দেখতে পান ইমন বেঁচে নেই। এমন মৃত্যু মানতে পরিবারের সদস্যদের কষ্ট হলেও ভাগ্যের লিখন ভেবে কাউকে দায়ী না করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

ছয়দিন পর মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। এতে দেখা যায়, কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে বেশ কয়েকজন ইমনকে হাত-পা বেঁধে মারধর করছে, শরীরে পুশ করা হচ্ছে ইনজেকশনও। এরপরই মিরপুরে তোলপাড় শুরু হয়। আজ এ ঘটনায় মামলা করা হতে পারে।

জানতে চাইলে ইমনের মা কামরুন্নাহার বলেন, ইমনকে সুস্থ অবস্থায় ওখানে রেখে আসা হয়েছিল। পরে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। ইমনের বাবা এজাজুল আজিম বলেন, ইমনের নির্মম মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

সমর্পণে গিয়ে মঙ্গলবার মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ওই নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত রুবেল নামে এক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। তিনি জানান, উচ্ছৃঙ্খলতা ঠেকাতে হাত বেঁধে চড়থাপ্পড় মারা হয় ইমনকে। সমর্পণ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক হাবিব উদ্দিন বলেন, নির্যাতনে নয়, হৃদরোগে মারা গেছে ইমন। এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি মিরপুর থানার ওসি আবুল কালাম। মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন ফারাজি বলেন, ইমনের শরীরের আঘাতের চিহ্ন ছিল, কিন্তু কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।

ইনিউজ ৭১/এম.আর