বাংলাদেশে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আওতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট রায় প্রদান করেছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
গত ৫ ডিসেম্বর পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের বিষয়ে রুল জারি করার পর আদালত আজ রায় ঘোষণা করে। সকাল ১১টার দিকে রায় পড়া শুরু হলে এক ঘণ্টার মধ্যে তা ঘোষণা করা হয়। আদালত রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেছে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে।
এ বিষয়ে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরিফ ভূঁইয়া শুনানি করেন। বিএনপির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতের পক্ষে ছিলেন শিশির মনির এবং ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন ইশরাত হাসান, এবং চার আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী।
পঞ্চদশ সংশোধনীটি ২০১১ সালে সংবিধানে সংশোধন এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। এছাড়া, এই সংশোধনীর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে ৫০ এ উন্নীত করা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করার প্রস্তাব রাখা হয়।
এছাড়া, সংশোধনীটি রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মধ্যে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে ৭(ক)(খ) অনুচ্ছেদও সংযোজন করা হয়, যা সংবিধানবহির্ভূতপন্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করে।
এ রায়ের ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত এবং নির্বাচন ব্যবস্থায় নতুন আলোচনার সৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।