প্রকাশ: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩
টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মানব পাচারের একটি বড় চক্র নস্যাৎ করেছে এবং ৬ জন পাচারকারীকে আটক করেছে। শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রিপাড়া এলাকা থেকে মানবপাচার চক্রের সক্রিয় সদস্যরা হাতেনাতে ধরা পড়ে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফের সাবরাং মিস্ত্রিপাড়ার প্রবাসী মো. শাকেরের স্ত্রী শামসুন্নাহার (৩৫), উখিয়ার ২০ নং বালুখালী এফডিএমএন ক্যাম্পের মৃত জালালের স্ত্রী হোসনে আরা (৩১), আবুল হাশেমের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল (৫০), ২৬ নং শালবাগান এফডিএমএন ক্যাম্পের মৃত সৈয়দ আকবরের স্ত্রী নুরুন্নিসা (৪৯), সৈয়দ আহমদের ছেলে ইউসুফ আলী (৪৭) এবং ১৫ নং জামতলি এফডিএমএন ক্যাম্পের আবু সামাদের ছেলে হারুন (৩৫)।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আশিকুর রহমান জানান, গত শনিবার সাগরপথে মিয়ানমার থেকে পাচার করা কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে পাচারকারী চক্র শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে লুকিয়ে রাখে। পরে তাদেরকে টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।
বিজিবি গোপন সংবাদ অনুসন্ধান করে এবং পাচারকারীদের তৎপরতা আঁচ করতে পেরে শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার শামসুন্নাহারের বাড়ি ঘেরাও করে। অভিযানের সময় পাচারকারী চক্রের দুইজন বাড়ির পিছনের দিকে পালিয়ে গেলেও বিজিবি টহল দল দ্রুত বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া ঘর থেকে ৬ জনকে আটক করে।
আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, তারা টাকার বিনিময়ে মানব পাচার করে আনা লোকজনকে বাড়িতে সাময়িকভাবে লুকিয়ে রাখত এবং পরবর্তীতে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে আনা ব্যক্তিদের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্থানান্তর করত। এছাড়া তারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে FDMN কার্ড প্রাপ্তিতে সহায়তা করত।
লে. কর্ণেল আশিকুর রহমান বলেন, এই অভিযান বিজিবির জিরো টলারেন্স নীতির অংশ এবং দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন সাহসী ও কার্যকরী পদক্ষেপ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। মানব পাচার রোধে বিজিবি নিয়মিত তৎপর।
আটককৃতদের টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে এই চক্রের আরও দুইজন—কালু মিয়া (৩৫) ও হাশেম মোল্লা (২৫)—এখনো পলাতক রয়েছে।
স্থানীয়রা বিজিবির এ কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে মানব পাচারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অভিযান চালানো হবে, যাতে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের আগ্রাসন রোধ করা যায়।