প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৭
সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতার আতঙ্কে নানাবাড়িতে আশ্রয় নেওয়া এক শিশু খেলার সময় পুকুরে পড়ে প্রাণ হারিয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ঝিটকি গ্রামে। নিহত শিশুর নাম খাদিজা, তার বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর।
সে সদর উপজেলার ধুলিহরের গোবিন্দপুর গ্রামের চা দোকানি মমিনুর রহমান মহিন গাজীর ছোট মেয়ে। মঙ্গলবার দুপুরে শিশু খাদিজা তার মা রেবেকা খাতুন ও আট বছর বয়সী বড় বোন আয়েশাকে নিয়ে নানাবাড়িতে অবস্থান করছিল। এলাকায় চলমান জলাবদ্ধতা থেকে নিরাপদে থাকার জন্যই মা তাদের নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। দুপুরে খেলার ছলে সবার অজান্তে খাদিজা পুকুরে পড়ে যায়।
ছোট বোনকে বাঁচাতে ছুটে গিয়ে বড় বোন আয়েশাও পানিতে পড়ে যায়। আশপাশের লোকজন দ্রুত দুজনকেই উদ্ধার করলেও ঘটনাস্থলেই খাদিজার মৃত্যু ঘটে। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া আয়েশাকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে সে চিকিৎসার পর আশঙ্কামুক্ত হয়। এই ঘটনায় গোবিন্দপুর ও ঝিটকি—উভয় এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
রাতে শিশুটির মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে শত শত মানুষ এক নজর দেখার জন্য ভিড় করে। সবাই যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না যে, জলাবদ্ধতা থেকে নিরাপদে থাকতে গিয়ে সেই পানিতেই মৃত্যু হলো খাদিজার। স্থানীয় সাংবাদিক মেহেদী হাসান শিমুল জানান, পরিবারের নিজস্ব কোনো কবরস্থান না থাকায় খাদিজাকে গ্রামের এক উঁচু জায়গায় কবর দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর চোখে পানি, অনেকেই এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শামীনুল ইসলাম জানান, শিশুটির মৃত্যুর বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে থাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের প্রতি বাড়তি নজরদারি রাখার আহ্বান জানান তিনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার স্থানগুলোতে সতর্কতা জারি করা হলেও বাস্তব প্রয়োগে ঘাটতি থাকার অভিযোগ রয়েছে।