প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ২২:৪৭
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নির্মাণে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে নিজ হাতে সড়কের কার্পেটিং টেনে তুলে অনিয়মের প্রমাণ পান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার, ২৩ জুন বিকেলে, দেবীদ্বার উপজেলার আব্দুল্লাহপুর থেকে সুবিল ইউনিয়নের সংযোগ সড়কে।
স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে জনদুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তারা। অবশেষে সড়কের কাজ শুরু হলেও তাতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে হাসনাত আব্দুল্লাহ সরেজমিনে গিয়ে নিজ হাতে কার্পেটিং টেনে তুলে দেখেন, পিচের নিচে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই এবং কার্পেটিংয়ের মান খুবই খারাপ।
পরিস্থিতি দেখে তিনি দ্রুত উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকারকে অবহিত করেন এবং কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর সাথে কথা বলেন। তিনি আশ্বাস দেন, অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং যথাযথ মান নিশ্চিত করে দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে প্রায় ২ হাজার মিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কের কাজের বরাদ্দ হয় প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকা। ‘মেসার্স আরতার এন্ড ইয়েষ্টেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে শুধুমাত্র মেকাডম পর্যন্ত কাজ করে ফেলে রাখে ঠিকাদার। এরপর প্রায় চার বছর কাজ বন্ধ ছিল।
চলতি বছরে সরকারের চাপ ও তদারকিতে আবারও কাজ শুরু হয়। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের সরকারের তত্ত্বাবধানে গত মে মাসে কার্পেটিং শুরু হলেও মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বর্তমান বাজার মূল্যে কাজ করতে আপত্তি থাকায় তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে গিয়ে অনিয়ম করে ফেলে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ সড়কটি দেবীদ্বার উপজেলার সুবিল, রসুলপুর, ও ফতেহাবাদ ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষের জন্য প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। দীর্ঘ বিলম্ব ও নিম্নমানের কাজের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত কাজের মান যাচাই করে নতুনভাবে কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী জানান, চলতি অর্থবছরে কাজটি শেষ না হলে তা নতুন করে বরাদ্দ ছাড়া সম্ভব হবে না। ফলে এখনই সঠিকভাবে কাজ শেষ করা জরুরি। স্থানীয় জনগণের সঙ্গে প্রশাসনের সমন্বয়ে কাজের মান ঠিক রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।