প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ২১:১৬
মৌলভীবাজার শহর সোমবার দুপুরে পরিণত হয় এক উত্তাল প্রতিবাদের মিছিলে, যেখানে স্কুলছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুম হত্যার বিচার এবং খুনি জুনেল মিয়ার ফাঁসির দাবিতে রাজপথে নামে শত শত মানুষ। কুলাউড়া উপজেলার শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এই মেধাবী ছাত্রী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয় বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। আয়োজনে নেতৃত্ব দেয় শেখ বোরহান উদ্দিন (রহঃ) ইসলামী সোসাইটি, সমন্বয়ে ছিলেন আরও কয়েকটি সংগঠন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব, সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক ইমাদ উদ দীন ও আবু সামাদ সুজেল।
প্রতিবাদী বক্তারা বলেন, এক নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডে ঝরে গেছে একটি সম্ভাবনাময় জীবনের আলো। জজ কোর্টের পিপি ড. আব্দুল মতিন, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক এস এম উমেদ আলী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান, প্রভাষক তাজুল ইসলামসহ অনেকে দোষীকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। নিহত নাফিসার পিতা আব্দুল খালিক ও ভাই আফিফ ইসলাম রাদিন তাদের বক্তব্যে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অপরাধীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আইনের প্রতি আস্থা ফেরাতে হবে।
বিক্ষোভে অংশ নিতে কুলাউড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নারী-পুরুষ শহরে আসে ব্যানার-ফেস্টুনসহ বাসে করে। শহরের চৌমুহনী, চাঁদনীঘাট, প্রেসক্লাব মোড়, আদালত এলাকা বিক্ষোভে সরব হয়ে ওঠে। মিছিলে উঠে আসে একটাই স্লোগান—"নাফিসার খুনির ফাঁসি চাই, ন্যায়বিচার চাই"।
উল্লেখ্য, ১২ জুন সিংগুর গ্রামে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় নাফিসা, এবং ১৪ জুন বিকেলে বাড়ির পাশের ছড়া থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। প্রাথমিক তদন্তে পাশের বাড়ির বাসিন্দা জুনেল মিয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে যেন দেশের প্রতিটি মানুষ আইনের প্রতি আস্থা ফিরে পায়, সেই প্রত্যাশা জানিয়ে শেষ হয় প্রতিবাদ কর্মসূচি।