প্রকাশ: ১ জুন ২০২৫, ১৬:২৫
মাদারীপুরে ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালের নানা অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার সকালে মাদারীপুর দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম হাসপাতাল পরিদর্শন করে বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই-বাছাই করেন এবং সেবা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। দুদক সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা ১০ শয্যার আইসিইউ এখনও চালু হয়নি। পাশাপাশি সিটিস্ক্যান মেশিন বন্ধ রয়েছে এবং হাসপাতালের রোগীদের জন্য মানহীন খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এই অভিযোগ একটি ভুক্তভোগী দুদকের প্রধান কার্যালয়ে লিখিতভাবে দায়ের করেন, যার ভিত্তিতে মাদারীপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তদন্ত শুরু করেন।
এই তদন্তের এক অংশ হিসেবে হাসপাতালের সাবেক প্রধান সহকারী ও হিসাবরক্ষক গোলাম কাওসার মিয়ারের বিরুদ্ধে ভাউচারবিহীন ২৬ লাখ টাকার তেলের বিল উত্তোলনের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মো. আক্তারুজ্জামান জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে এবং নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, দুদক তদন্তের মাধ্যমে যেসব অনিয়ম পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মাদারীপুর জেলার হাসপাতালের এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি স্থানীয় জনগণের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন যাবত রোগীরা মানসম্মত চিকিৎসা ও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে তারা জানান। আইসিইউ না চালু থাকা ও সিটিস্ক্যান মেশিন বন্ধ থাকায় জরুরি রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালের খাদ্যের মান সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন রোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।
দুদকের এই অভিযান হাসপাতালের গঠনমূলক সংস্কার এবং সেবার মান উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদেরও এই তদন্তের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, তদন্ত শেষ হলে হাসপাতালের দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করে রোগীদের জন্য উন্নত সেবা নিশ্চিত করা হবে।
এই ঘটনার পর হাসপাতালের ভবিষ্যত ব্যবস্থাপনা ও সেবার মান নিয়ে জনমনে উৎসাহ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। দুদকের তদন্তের ফলাফল স্বাস্থ্যখাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নতুন পথ দেখাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে।