প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১৮:৫৬
নোয়াখালীর সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের চাঁন মিয়ার মোড় এলাকায় এক পল্লী চিকিৎসকের ছুরিকাঘাতে মো. আবুল হোসেন রাফি নামে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোর গুরুতর আহত হয়ে মারা গেছেন। গত ২২ মে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটে এই ঘটনা, যা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে রাতে তার মৃত্যু হয়। নিহত রাফি ওই এলাকার অলিপুর গ্রামের মো. আজাদের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল চারটার দিকে রাফির বন্ধু সায়েম ও রুমন একটি ফুটবল খেলায় অংশ নেন। খেলার সময় রুমনের ঠোঁট ফেটে যায়, যা দেখে বন্ধুরা তাকে দ্রুত পল্লী চিকিৎসক মো. শাহীনের কাছে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। কিন্তু পল্লী চিকিৎসক রুমনকে চিকিৎসা দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করলে চিকিৎসকের সঙ্গে রুমন ও তার বন্ধুদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
এ সময় প্রধান বিরোধ হয়ে দাঁড়ায় পল্লী চিকিৎসক শাহীন ও রাফির মধ্যে, যার পরিণতি হিসেবে শাহীন রাফিকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে গুরুতর আহত করেন। আহত অবস্থায় রাফিকে দ্রুত স্থানীয়রা উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আল বারাকা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক পলাতক রয়েছেন।
নোয়াখালীর সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
ঘটনাটি এলাকায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এলাকাবাসী এই ধরনের সহিংসতা বন্ধে তৎপরতার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা দ্রুত বিচার দাবি করেছেন যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে। নিহত রাফির পরিবার ও বন্ধুদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে পল্লী চিকিৎসকের হাতে একজন কিশোরের প্রাণহানির ঘটনাটি এলাকার সামাজিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
অত্যন্ত দুঃখজনক এই ঘটনার মধ্য দিয়ে পুনরায় মনে করা হচ্ছে, সামাজিক সহিষ্ণুতা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। এই ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় কমিউনিটির সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।