প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫, ১৯:৩০
ঝিনাইদহে একটি সক্রিয় হানিট্র্যাপ চক্রের ভয়ংকর প্রতারণার কাহিনী উঠে এসেছে যা নারী ও পুরুষ উভয়কেই ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত এই চক্রের মূলহোতা আসমা খাতুন সাথী, যার স্বামী দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বিদেশে থাকলেও তিনি নিয়মিতভাবে গর্ভবতী হচ্ছেন বলে মিথ্যা কাগজপত্র তৈরি করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন।
মঙ্গলবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেন চাকলাপাড়া এলাকার গুলশান আরা নামে এক নারী। তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সাথীর বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের করা প্রতারণা সংক্রান্ত মামলাগুলো ভুয়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাথীর শ্বশুর কামাল হোসেন, প্রতারিত গৃহবধূ মর্জিনা খাতুন, আল আমিন, মিলন ও তানজিলসহ একাধিক ব্যক্তি যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া কাবিননামা বানিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এই চক্র।
মর্জিনা খাতুন জানান, তার কাছ থেকে ৫ লাখ, আল আমিনের কাছ থেকে ২ লাখ এবং শ্বশুর কামালের কাছ থেকে আরও ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাথী। ভুয়া কাবিন ও কল রেকর্ডের ভয় দেখিয়ে নারী ও পুরুষ উভয়কে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে চলেছেন তিনি।
এছাড়া আদালতের কয়েকজন আইনজীবী, বিল্লাল হোসেন মহুরী ও পুলিশের সাবেক এসআই ফরিদ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। চক্রটি ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা ও অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত ভুয়া নথি তৈরি করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এবং একের পর এক মামলা করে যাচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, খুলনা ও ঝিনাইদহ আদালতে চক্রটি ৮টি ভুয়া মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলার কারণে অনেক পরিবার ভেঙে গেছে, পুরুষরা গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে গেছে এবং নারীরা মামলা আতঙ্কে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আসমা খাতুন সাথী বারবার ঠিকানা বদলে, নকল স্বাক্ষর ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সহযোগিতা চাওয়া হলেও তারা এখনও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এই চক্রের প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আইনি প্রতিকার ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারেন এবং এই ধরণের প্রতারণা থেকে সমাজ রক্ষা পায়।