প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১৬:২৩

বৈশাখের প্রচণ্ড দাবদাহে দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর হিলি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বিশেষ করে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়তে দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এসব রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১৩ মে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের অধিকাংশ বেডেই রোগীরা ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ৫০ শয্যা হলেও ভর্তি রয়েছেন প্রায় ৬০ জন রোগী, যার ফলে অনেকেই মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন অল্পসংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স।
একই দিনে বহির্বিভাগে ৩৪৬ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১১০ জন পুরুষ, ১৭৩ জন নারী এবং ৬৩ জন শিশু রোগী ছিলেন। আগের দিন ১২ মে ভর্তি ছিলেন ৬০ জন রোগী, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন পরে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স মাহফুজা খাতুন জানান, সাধারণত প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়। কিন্তু গত ১৫ দিনে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি, পাশাপাশি বয়স্করাও রয়েছেন। তিনি বলেন, তীব্র গরম ও পানিবাহিত জীবাণুর কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ভর্তি থাকা রোগীদের অনেকে জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হাসপাতালে এসে ভর্তি হলে স্যালাইন ও ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীদের অনেকে বেড না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তবে বেশিরভাগই চিকিৎসা নিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, বর্তমানে হাসপাতালটিতে কনসালট্যান্ট, সার্জন, ও মেডিকেল অফিসারসহ ১৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২ জন। ফলে চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। চিকিৎসক সংকট সমাধানে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্যালাইন, ওষুধ এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী পর্যাপ্ত থাকলেও বেড সংকট থাকায় অনেক সময় রোগীদের মেঝেতে রাখতেই হচ্ছে। গরমে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে তিনি জানান, সবাইকে পর্যাপ্ত পানি পান, খাবার স্যালাইন খাওয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।