নওগাঁ শহরের বরুনকান্দি এলাকা থেকে অজ্ঞান অবস্থায় ছয়জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে স্থানীয়রা তাদেরকে গ্যাস পাম্পের পাশে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে একজন কিছুটা সচেতন অবস্থায় ছিলেন। তিনি অস্পষ্টভাবে জানান, হেমায়েতপুর থেকে ট্রাকে করে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তাদের কলাপানি ও রুটি খাওয়ানো হয়েছিল। এরপর কী ঘটেছে তা স্পষ্টভাবে বলতে পারেননি তিনি।
নওগাঁ সদর মডেল থানার এসআই হারুন রশিদ জানান, উদ্ধারকৃতদের নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করছে বলে তিনি জানান। ধারণা করা হচ্ছে, তারা অজ্ঞান পার্টির শিকার হয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগীদের অবস্থা স্থিতিশীল। নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আবু জার গাফফার বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এখনো তারা পুরোপুরি সচেতন হতে পারেননি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক মাস ধরে এলাকায় অজ্ঞান পার্টির কার্যক্রম বেড়েছে। তারা সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন কৌশলে ধরে নিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। এ নিয়ে জনমনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন। দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ভুক্তভোগীদের আত্মীয়স্বজনরা হাসপাতালে পৌঁছেছেন। তারা পুলিশের কাছে দ্রুত তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, এলাকাটি কিছুটা নির্জন। সন্ধ্যার পর সাধারণ মানুষ একা চলাফেরা করতে ভয় পান। স্থানীয়রা দাবি করছেন, পুলিশের নজরদারি বাড়ানো উচিত। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যদি দ্রুত অপরাধীদের দমন না করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে।