
প্রকাশ: ১ জানুয়ারি ২০২৪, ০:৭

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম-১ আসন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে দু’জন প্রার্থী পথসভা সহ প্রচার প্রচারণার মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অপর দু’জন প্রার্থী চালাচ্ছেন দায়সারা প্রচার প্রচারণা। একজন প্রার্থী এখনো প্রচার প্রচারণা শুরুই করেননি। তিনজন প্রার্থীকে অধিকাংশ ভোটার চেনেন না।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নাগেশ্বরী উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মোট ভোটার ৩ লাখ ৩০ হাজার ৪২৯ জন। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মোট ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৩৪ জন। সংসদ সদস্য হতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী একেএম মোস্তাাফিজুর রহমান মোস্তাক (লাঙ্গল), জাকের পার্টির আব্দুল হাই মাস্টার (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের কাজী লতিফুল কবির রাসেল (ফুলের মালা) ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নুর মোহাম্মদ (আম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মনিরুজ্জামান খান ভাসানী (এক তারা) এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ এই আসনে দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির প্রার্থী পথসভা করা সহ ব্যাপক হারে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী এখনো নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করতে পারেননি। বিএনপির ভোট বর্জন এবং আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেওয়ায় প্রচার প্রচারণায় জাতীয় পার্টি এ আসনে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা এক হয়ে জাপার প্রার্থীর পক্ষে পথসভাসহ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিতে এবং জাপা প্রার্থীকে জয়ী করতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

জাকের পার্টি প্রার্থী আব্দুল হাই নেতা-কর্মীদের নিয়ে তার নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই দুই প্রার্থী ছাড়া বাকি প্রার্থীদের নির্বাচনী গণসংযোগ দেখা যাচ্ছেনা। কোনো কোনো প্রার্থী এখনো পোস্টার লাগায়নি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ও শিলখুড়ি ইউনিয়নের লুৎফর রহমান, আঃ রাজ্জাক, সামছুল ও করিম বলেন, জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীরা আমাদের এলাকায় কখনো আসেননি। তাদেরকে আমরা চিনিও না। নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ, কচাকাটা ও রামখানা ইউনিয়নের হাফিজুর রহমান, নূরে আলম ও সুমন বলেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থীকে আমরা দেখিনি।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী নুর মোহাম্মদ বলেন, আমরা নতুন তাই ভোটাররা আমাদের সেভাবে চেনেন না। পরিচিত হতেই নির্বাচনে এসেছি। জনসভা বা পথসভা করা হয়নি। দুই উপজেলাতে পোস্টার লাগানো হয়েছে। মাইকিং করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী মনিরুজ্জামান খান ভাসানী বলেন, ছয়টি সমমনা দল এক হয়ে জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। জোটের সিদ্ধান্ত না পাওয়ার কারণে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করতে পারিনি। সোমবার ১ জানুয়ারি থেকে পোস্টারিং ও মাইকিং শুরু হবে।
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী কাজী লতিফুল কবির রাসেলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জাকের পার্টি প্রার্থী আব্দুল হাই বলেন, জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। ভোটাররা আমাকেই ভোট দেবেন। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে একাধিক জায়গায় বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি। নাগেশ্বরীর হাছনাবাদ ইউনিয়নে আমার নির্বাচনী জনসভায় প্রতিপক্ষ হামলা করেছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএম মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারীর জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে চারবার জাতীয় সংসদে পাঠিয়েছেন। এবারেও তারা আমাকে নির্বাচিত করবেন ইনশাআল্লাহ।
ভূরুঙ্গামারীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, কুড়িগ্রাম-১ আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।