প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ৩:১৮
প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে গোপন বৈঠক আয়োজন করেছেন কুমিল্লা- ৪ দেবীদ্বার নির্বাচনী এলাকার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাজী মোহাম্মদ ফখরুল (এমপি)। এমন সংবাদে সেখানে আচমকা হাজির হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত।
ঘটনাটি ঘটে রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ২টায় কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলাস্থ অভিজাত হোটেল ‘এ্যালিট রেস্তোরা’য়। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই ছোটাছুটি শুরু করেন।
অনুষ্ঠানের বিষয়ে জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজ’র প্রভাষক, আওয়ামীলীগ নেতা ও দেবীদ্বার পৌর মেয়র মো. সাইফুল ইসলাম শামীম জানান, আজ শিক্ষক সমিতির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ছিল। তাই আমরা দেবীদ্বারের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৬০/৭০ জন শিক্ষকের উপস্থিতিতে কুমিল্লা মহানগরের ঝাউতলা এ্যালিট রেস্তোরার ৪ তলায় পূণর্মিলনী ও দুপুরে লাঞ্চের আয়োজন করি। এটাকে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের পক্ষ থেকে দেবীদ্বারের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর গোপন বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলে প্রশাসনকে জানান। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত সরজমিনে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে চলে যান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের সমর্থক আবুল হোসেন জানান, ওই হোটেলের ৪ তলায় কলেজ শিক্ষকদের (প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসাবে তালিকাভুক্ত) নিয়ে দেবীদ্বার উপজেলা কলেজ শিক্ষক সমিতি কর্তৃক বর্ষ সমাপনী মিলন মেলার ব্যানারে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যে অনুষ্ঠানে শুধু এমপি আশীর্বাদপুষ্ট কলেজ শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী কেন্দ্রের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে আবেদন করেছেন। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট চলে আসায় গোপন বৈঠকে আর কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল আসেননি।
ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবরে বাইরে ছুটে আসেন দেবীদ্বার আলহাজ্ব জোবেদা খাতুন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রভাষক নূর মোহাম্মদ বাবু, তিনি আয়োজকদের মধ্যে একজন। তিনি প্রথমে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে জানান তিনি দেবীদ্বার উপজেলার কলেজ শিক্ষক সমিতির নেতা। কথা বলার একপর্যায়ে তিনি নিজের রাজনৈতিক দলের পরিচয়ও দেন। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতির কারণে অনুষ্ঠান আর শুরু হয়নি। পরে একজন দুজন করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন সবাই।
অনুষ্ঠানের আয়োজক, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল সমর্থিত কুমিল্লা উত্তর জেলা সৈনিক লীগের আহবায়ক ও দেবীদ্বার আলহাজ্ব জোবেদা খাতুন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রভাষক নূর মোহাম্মদ বাবু বলেন, আমরা কলেজ শিক্ষকদের অনুষ্ঠান করছি। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই। তাহলে উপজেলার সকল কলেজের শিক্ষকদের কেন আনা হলো না, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দেননি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সৌম্য চৌধূরী জানান, আমরা যে সংবাদ প্রাপ্তির ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে এসেছি, এখানে উল্লেখযোগ্য কোন রাজনৈতিক নেতাকে পাইনি। আয়োজকরা জানিয়েছেন এটি শিক্ষক সমিতির নামে ব্যানার সাটিয়ে তাদের বর্ষপূর্তীর অনুষ্ঠান করেছিল। আমরা শিক্ষকদের তালিকা চেয়েছি। প্রায় শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। যদি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।