প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৩, ৩:২৫
ছাগল কোমল পানীয় , চিপস, চানাচুর ,আপেল , কমলা খায়। কিন্তু ছাগল যে এসব খায় তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। ছাগল দু'টিকে প্রতিদিন একনজর দেখতে আসেন দূরদূরান্তের লোকজন।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার সার পলশিয়া গ্রামের জলিল দেড় বছর আগে স্থানীয় হাট থেকে ৩০ হাজার টাকায় ছাগল দুটি ক্রয় করে। নাম রাখা হয় রাজা-বাদশা। শখের বসে কেনা ছাগল দুটিকে নিজ সন্তানের মতোই যত্নসহকারে লালন-পালন করে আসছেন তিনি। নামের সাথে রয়েছে তাদের খাবারেরও মিল। ভোজনরসিক রাজা-বাদশার খাবারের পছন্দের তালিকায় রয়েছে চানাচুর, চিপস, আপেল, আঙ্গুর, কলা, কোকাকোলা, টাইগার, স্পীডসহ সকল ধরনের কোমল পানীয়। গোসল করানো হয় শ্যাম্পু দিয়ে। বাড়িসহ দাপিয়ে বেড়ায় পুরো এলাকা। মালিক জলিল মিয়া বাজার কিংবা কাজে যেখানেই যান না কেন পিছু নেয় রাজা-বাদশা। পছন্দের খাবার পেলেই শান্ত থাকে তারা। শখের বসে লালন-পালন করলেও ভালো দাম পেলে কুরবানির ঈদে রাজা-বাদশাকে বিক্রির চিন্তা ভাবনা রয়েছে মালিক আব্দুল জলিল ও স্ত্রী ফিরোজা বেগম।
ছাগল দু'টির গায়ের রঙ চকচকে সাদা। আছে কালো ছোপ। চকচকে সাদার মাঝে হালকা কালো রঙ । লোম কোঁকড়ানো হলেও সুবিন্যস্ত। শিং দুটো যেনো সেই আগেকার রাজা-বাদশাদের ছুরি মতো, আকাঁ-বাঁকা করে মাথার উপরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
আব্দুর জলিলের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির দু'টি ছাগলটি দেখতে তার বাসায় ভিড় করছে উৎসুক মানুষ। ছাগলটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাবাসীর মনে।
স্থানীয় হাসেম জানান, জলিলের নিজের পালিত ছাগল দু'টির দাম চাইছেন তিন লাখ টাকা। এখন ছাগল দু'টির দাম গরুর দামের চেয়েও বেশি। তাই ছাগল দু'টি দেখতে আসছি।
স্থানীয়া করিম জানান, আমাদের সামনেই ছাগল দু'টি বড় হয়েছে। ছাগলের এমন খাবার খাওয়া আগে কখনও দেখিনি।
একাধিক স্থানীয়রা জানান, রাজা-বাদশা নামে ছাগল এর আগে দেখেনি তারা। ভোজনরসিক ছাগল দু'টির খাদ্য তালিকায় মানুষের খাবার।
পাকুল্লা থেকে দেখতে আসা মিজান বলেন, লোকমুখে শুনে আমার বিশ্বাস হয়নি ছাগলে এমন খাবার খায়। তাই নিজ চোখে দেখতে এসেছি।
ফলের দোকানদার রবিন ও হাসিব জানায়, রাজা-বাদশার জন্য আমাদের এখান থেকে প্রতিদিন নানারকম ফলন কিনেন তিনি। এছাড়াও বিকেল হলেই জলিলের সাথে বাজারে আসে।
জলিল বলেন, এবারে কোরবানির জন্য দুটি বড় ছাগল তৈরি করেছি। আদর করে ছাগল দুটির নাম দিয়েছি ‘রাজা-বাদশা’। নিজ সন্তানের মতোই লালন-পালন করেন তিনি। ছাগল দু'টি মিশে গেছে পরিবারের সাথে।
তিনি আরো বলেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন বাড়ীতে ছাগলের ক্রেতা প্রদর্শন করেন। অনেকেই দুই লাখ টাকা দাম হাঁকায়। এখানে বিক্রি করতে না পারলে কয়েকদিন পর হাটে নিয়ে যাবো। দুটি ছাগলের মুল্য নির্ধারণ করেছি তিন লাখ টাকা। দেড় বছরে খেয়েছে এক লাখেরও বেশি টাকার খাবার।
ফিরোজা বেগম জানান, স্বামী আব্দুল জলিল ডাকলেই তার কথা শোনে রাজা-বাদশা। তাদের যে কেউ সামলাতে পারে না। শক্তি দিয়ে এদের সামলানো যায় না। তবে এরা কথার অবাধ্য হয় না। স্বামীর পাশাপাশি আমি যত্ন নেই। ওরা কিছুক্ষণ বাড়ীতে না থাকলে কেমন যেন খালি খালি লাগে।