প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২২, ১:৩৫
বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় জলসীমানায় কুয়াকাটা মহিপুর এলাকার এফবি স্বাধীন নামের একটি মাছধরা ট্রলারের ১২ জেলেকে ভারতীয় জেলেরা উদ্ধার করে কাকদ্বীপে নিয়ে যান। শুক্রবার বিকেলে ১২ জেলের সবাইকে সেখানে স্থানীয় পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে ডুবে যাওয়া ট্রলারসহ মাছধরার সরঞ্জামের কোন হদিস নেই বলে জানা গেছে মৎস্য বন্দর সুত্রে। এছাড়া কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে দেড় শতাধিক জেলেসহ ১২টি মাছধরা ট্রলার ডুবির খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এর অধিকাংশ জেলে উদ্ধার হলেও ট্রলারসহ কোন মালামালই উদ্ধার করা যায়নি। ওইসব ট্রলারের ২১ জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার দুপুরে সুন্দরবনের দুবলার চর এবং সাগরে ভাসমান জীবিত এক জেলেকে উদ্ধারের মধ্য দিয়ে ১৩ জেলে উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া শুক্রবার বিকেল ৩টায় কক্সবাজারের এফবি আমজাদ নামে একটি মাছধরা ট্রলার বঙ্গোপসাগরের চালনার বয়া এলাকায় ডুবে যায়।
ট্রলারটি উদ্ধার করতে না পারলেও ওই ট্রলারের ১৭ জেলেকে আলীপুরের সাগরকন্যা নামক অপর একটি মাছধরা ট্রলারে আজ শনিবার বিকেলে আলীপর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসে। বর্তমানে ১৭ জেলের সকলেই সুস্থ্য আছেন। সাগরকন্যা ট্রলারের মাঝি মোঃ কবির একথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে শুক্রবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে ১২টি মাছধরা ট্রলার ডুবির খবর নিশ্চিত করেছেন আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা ও মহিপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা। ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলো হচ্ছে, এফবি মা’মণি-০৩, এফবি সাইফুল, এফবি আল মামুন, এফবি আশ্রাফুল, এফবি নুরবানু, এফবি কুলসুম, এফবি মরিয়ম, এফবি রফু সহ নামবিহীন আরও চার’টি ট্রলার।
এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বলে উল্লেখ করেছেন আড়ৎদার মালিক সমিতির নেতা মোঃ আনছার উদ্দিন মোল্লা। এসব ট্রলারের দেড় শতাধিক জেলে নিখোঁজ রয়েছেন বলেও তিনি দাবী করেছেন। তবে জেলেরা জানান, এসব জেলেরা ভারতের জেলেদের হাতে উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে এফবি স্বাধীন ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পর ভারতীয় জেলেদের হাতে ১২ জেলের সকলে উদ্ধার হওয়া প্রসঙ্গে ওই ট্রলারের মাঝী মোঃ ইব্রাহীম ভারতের কাকদ্বীপ থেকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে ভারতের জলসীমানায় প্রবল ঢেউয়ের কবলে পড়ে তাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। এসময় ঝড়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশের আরও ১৬ ট্রলার নিমজ্জিত হয় বলে তিনি দাবি করেছেন।
তিনি জানান, এসময় অধিকাংশ জেলেদের উদ্ধার করে ভারতীয় জেলেরা সে দেশের পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। তবে এসব ট্রলারসমূহ কোন এলাকার এটি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি জেলে ইব্রাহীম। নিখোঁজ ট্রলারগুলো হচ্ছে আলীপুরের এফবি আবদুল্লাহ, এফবি জাবের, এফবি মা’মণি, এফবি আব্দুল্লাহ(২), এফবি মায়ের দোয়া (০১), এফবি মায়ের দোয়া, এফবি ইয়াসমিন, এফবি রাকিবুল, এফবি ওবায়দুল, এফবি জলিল।
পায়রা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর সর্তকতা সংকেত অব্যাহত এবং ঝড়ো বাতাস বইতে থাকায় সহ¯্রাধিক মাছধরা ট্রলার ইতিমধ্যে কুয়াকাটা সংলগ্ন শিববাড়িয়া নদীতে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে নিখোঁজ জেলে পরিবারে চলছে কান্নার রোল। পরিবারের কর্মক্ষম মানুষটির সন্ধান পেতে আড়দঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে ছুটছেন স্বজনরা।
কলাপাড়ার নিজামপুর কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার সেলিম মন্ডল জানান, সাগরে ট্রলার ডুবির খবর পেয়ে তাদের একাধিক টিম উদ্ধার অভিযানে নেমেছে।