বেঁধে দেয়া দামে সরকারকে পণ্য বিক্রির আহ্বান বিডিএমএস নেতৃবৃন্দের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ ২০২৪ ০৫:৫০ অপরাহ্ন
বেঁধে দেয়া দামে সরকারকে পণ্য বিক্রির আহ্বান বিডিএমএস নেতৃবৃন্দের

রমজান উপলক্ষে মাছ-মাংসসহ ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদফতর। এ সিদ্ধান্তকে অবিবেচনা, অসার, অর্থহীন ও কল্পনাপ্রসূত আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি (বিডিএমএস)। একই সঙ্গে কৃষি বিপণন অধিদফতরকেই বেঁধে দেয়া দরে পণ্য বিক্রির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। প্রয়োজনে অধিদফতরকে বাজারে দোকান বসাতে জায়গার ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে সমিতি।


মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগে বিডিএমএসের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন।

 

তিনি বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার সুযোগ নেই। এর মাধ্যমে খুচরা ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হবে। ম্যাজিস্ট্রেট যাবে আর মামলা করবে। বেঁধে দেয়া দামে কৃষি বিপণন অধিদফতর পণ্য বিক্রি করুক। আমরা জায়গা দেব। তাহলে বোঝা যাবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ নেয় কি না। না হলে অবিলম্বে দাম বেঁধে দেয়ার এ প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হোক।

 

দাম নির্ধারণের আগে সরকার কোনও আলোচনা করেনি অভিযোগ তুলে এসময় ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে চাঁদাবাজি, পরিবহন ব্যয় বিবেচনায় না নিয়ে দাম নির্ধারণ করে লাভ নেই। উৎপাদক, পাইকারি, খুচরা- সব পর্যায়েই মনিটরিং বাড়াতে হবে। বিস্তরভাবে না দেখে, শুধু খুচরা পর্যায়ে দাম বেশির অভিযোগ তোলা অযৌক্তিক বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা।

 

কারওয়ান বাজার পাইকারি আড়ৎ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান বলেন, উৎপাদক, পাইকারি, খুচরা- তিন স্তরেই কাজ করতে হবে। আমাদেরকে মোকাম ভাউচার দেয় না। ভাউচার চাইলে বলে ‘ব্যবসা করলে করেন না করলে নাই’। অথচ জরিমানা করা হয় খুচরায়। করপোরেট কোম্পানিগুলোকে মনিটরিং কে করবে?

 

কাঁচামাল আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম মাস্টার বলেন, আমরা সরকারের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করবো, খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের যেন হয়রানি করা না হয়। ২০ টাকার একটি লাউ বাজারে ঢুকে কেন ৬০ টাকা হয় তা তদারকি করতে হবে। কৃষি, বাণিজ্য, খাদ্য- সব পর্যায়ে সমন্বিত নজরদারি না করে শুধু খুচরা পর্যায়ে দাম বেঁধে দেয়াটা অযৌক্তিক-অবাস্তব ও অর্থহীন।

 


এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৭ দফা দাবি পেশ করেছে দোকান মালিক সমিতি। তাদের দাবিগুলো হলো-

 

১) ২৯ পণ্যের মূল্যনির্ধারণ অবিবেচনা, অসার, অর্থহীন ও কল্পনাপ্রসূত। তাই এখনই প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করতে হবে।

 

২) বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ও উৎপাদনের সঠিক পরিসংখ্যান নিশ্চিত করতে হবে। ব্যক্তি খাতের সঙ্গে সরকারি খাতের পার্থক্য বুঝতে টিসিবির সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

 

৩) বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে হবে।

 

৪) নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসতে হবে।

 

আরও পড়ুন: ২৯ কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করল সরকার

 

৫) বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

 

৬) ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্ন সংস্থার চাপমুক্ত অবস্থায় ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে।

 

৭) নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আরোপিত সব প্রকার ট্যাক্স ভ্যাট কমিয়ে সহনশীল পর্যায়ে আনতে হবে।


সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দোকান মালিক সমিতির সহসভাপতি আতিক উল্লাহ রোকন, মহাসচিব জহিরুল হক ভূইয়া প্রমুখ।