কুয়েটে সংঘর্ষের জেরে ভিসিসহ তিনজন অবরুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: বুধবার ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৫২ অপরাহ্ন
কুয়েটে সংঘর্ষের জেরে ভিসিসহ তিনজন অবরুদ্ধ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যসহ তিনজনকে মেডিকেল সেন্টারে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় স্বীকার ও নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে কুয়েটের জনসংযোগ দপ্তরের কর্মকর্তা শাহাদুজ্জামান শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  


তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেলে অসুস্থতার কারণে মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিলেন উপাচার্য। সেখানে উপ-উপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালকও উপস্থিত ছিলেন। তখনই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের অবরুদ্ধ করেন। বেলা ১১টার দিকে তাদের অবরুদ্ধ অবস্থায় রাখা হয় এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিন্ডিকেট সভার আহ্বান করা হয়।  


মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। তারা জানান, বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কুয়েটের সব ধরনের ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।  


কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে রেলগেট, তেলিগাতিসহ আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের সঙ্গে যোগ দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুপুর থেকে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।  


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীরা লাঠি, ইট-পাটকেলসহ ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করেন। আহতদের বেশির ভাগকেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  


পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি মানা হবে কি না, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।  


বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে উত্তেজনা চলছিল, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা না নিয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে, যা সংঘর্ষের মূল কারণ।  


এদিকে, সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এখনো উত্তপ্ত রয়েছে।