প্রেমিক-প্রেমিকা বিষপান করল পুলিশের সামনেই!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৬শে জুলাই ২০২২ ১০:৫৩ অপরাহ্ন
প্রেমিক-প্রেমিকা বিষপান করল পুলিশের সামনেই!

কুমিল্লা আদর্শ সদরের বলারামপুর এলাকার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নূরুন্নাহার সামিয়া ও পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর এলাকার যুবক সাজ্জাদ ভূইয়া বিজয়। দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের পর গত বছরের ডিসেম্বরে বিয়ে করেন দুজন। তাদের বিয়ে বিজয়ের পরিবার মেনে নিলেও, তা নিয়ে অপারগতা প্রকাশ করে সামিয়ার অভিভাবকরা।


এদিকে সামিয়া নিজেকে প্রাপ্তবয়স্ক দাবি করলেও জন্মনিবন্ধন অনুসারে সামিয়ার বয়স এখনো ১৮ হয়নি বলে জানায় সামিয়ার পরিবার। বিয়ের পর মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে বিজয়ের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ বিজয়কে আটক করে জেলে পাঠায়। পরে আদালতে সামিয়া তার প্রেমের সম্পর্ক ও স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে মর্মে জবানবন্দি দিলে বিচারক জামিন দেন বিজয়কে। প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় সামিয়াকে তার বাবা মায়ের জিম্মায় দেয়া হয়।


গতকাল এক ফেসবুক ভিডিওতে সামিয়া ও বিজয় জানায়, সামিয়াকে স্কুলে যাওয়া ও লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে পরিবার। বাড়িতে প্রায়ই সামিয়াকে নির্যাতন মারধর ও ঘরে আটকে রাখা হয়। নির্যাতনের কারণে বাড়িতে নেয়ার পরও বেশ কয়েকবার স্বামী বিজয়ের বাড়িতে চলে আসে সামিয়া। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টাও হয়। সামিয়ার পরিবার হয়রানি করলে দুজনে একসাথে আত্মহত্যা করবে বলেও ঘোষণা দেয়।


সবশেষ গত রোববার বাড়ি থেকে পালিয়ে স্বামীর বাড়িতে চলে যায় সামিয়া। ফোন করে বাড়িতে জানিয়ে দেয় স্বামীর বাড়িতে নিজের অবস্থানের কথা। বাড়িতে এসে মেয়েকে না পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় মেয়ে নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডাইরি করেন সামিয়ার বাবা বলারাপুর এলাকার ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান।


সামিয়ার বাবার জিডির ভিত্তিতে সোমবার সকালে সামিয়াকে উদ্ধার করতে বিজয়ের বাড়িতে যান কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের এসআই মিঠুনসহ সঙ্গীয় ফোর্স। এ সময় সামিয়া তার বাবার বাড়িতে ফিরে যাবে না বলে জানায় পুলিশকে। তাকে নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সামনেই বিজয় ও সামিয়া (কিটনাশক) বিষের বোতল খুলে বিষ পান করে। তাৎক্ষণিক তাদের পরিবারের লোকজন ও পুলিশ সদস্যরা দুজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।


বিষক্রিয়া শুরুর আগেই তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ফলে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় দুজনকেই।


এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সহিদুর রহমান জানান, ওরা প্রেম করেছে, মেয়ের পরিবার বিষয়টি মেনে না নিয়ে মামলা করেছে। আদালত মেয়েটিকে তার পরিবারের জিম্মায় দিয়েছিল, মেয়েটি আবার ছেলের বাড়িতে চলে যায়। মেয়েটিকে পরিবারের কাছে আনতে পুলিশ গিয়েছিল, তখন তারা বিষপান করেছে।