ধ্বংসের পথে ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত ঐতিহাসিক ক্যাসেল

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৫ই অক্টোবর ২০২১ ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
ধ্বংসের পথে ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত ঐতিহাসিক ক্যাসেল

ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত ময়মনসিংহের লোহারকুঠি নামে খ্যাত আলেকজান্ডার ক্যাসেল রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এক সময় সেখানে অবস্থান করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রুশ যুবরাজ ‘ডিউক’, লর্ড কার্জনসহ দেশী বিদেশী বরেণ্যরা। 


১৮৭৯ সালে ময়মনসিংহ শহরের জুবলী উৎসব পালন উপলক্ষে মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজ সূর্য্যকান্ত আচার্য্য চৌধুরী সুদৃশ্য এই ভবনটি নির্মাণ করেন। যা লোহারকুঠি নামে পরিচিত। পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয় আলেকজান্ডার ক্যাসেল। লোহা, কাঠ ও টিন দিয়ে এই ক্যাসেল নির্মাণের সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করতে ব্যবহার করা হয় ফ্রান্স থেকে আনা দুর্লভ বস্তু। 


ব্রিটিশ আমলে এই বাগান বাড়িতে অবস্থান করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাশিয়ার যুবরাজ, লর্ড কার্জনসহ বিদেশী গুনীজনরা। ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক এই ক্যাসেলের বর্তমান অবস্থা দেখে হতাশ দর্শনার্থীসহ সচেতনমহল।


কথাসাহিত্যিক ফরিদ আহমদ দুলাল বলেন, “আলেকজান্ডার ক্যাসেলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ঠ ছিল, এর যে সিলিং রয়েছে তার উপরে পুরো আস্তরের আব বিছানো ছিলো। যে আবের কারণে এই স্থাপনাটি ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।”


দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আলেকজান্ডার ক্যাসেল টিচার্স ট্রেনিং কলেজের লাইব্রেরী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এটির দায়িত্বে প্রত্নতত্ত বিভাগ থাকলেও রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে ক্যাসেলের লোহা-কাঠ ভেঙ্গে পড়ছে আর খসে পড়ছে পলেস্টারও। এসব নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে দর্শনার্থীদের। 


এদিকে, ক্যাসেলের সৌন্দর্য্যবর্ধন ও রক্ষনাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক।


তিনি বলেন, “এটি খুবই আকর্ষণীয় একটি জায়গা। এখানে অনেক মানুষের সমাগম হয় এবং তারা ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চায়। স্থাপনাটি এখন যে অবস্থায় আছে এখন এটাকে কিভাবে আরো সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা যায়  সে লক্ষে আমি উদ্যোগ গ্রহণ করবো।”


নতুন প্রজন্মকে আলেকজান্ডার ক্যাসেলের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান সংশ্লিষ্টরা।