দ্রুত গোনাহ মাফে যে আমল ও দোয়া করবে মুমিন
মানুষের পারস্পরিক সাক্ষাতে সালাম বিনিময়ের পর একে অপরের সঙ্গে মুসাফাহা করে বা হাত মেলায়। এটিকে ইংরেজিতে হ্যান্ডশেক (Handshake), আরবিতে মুসাফাহা (مُصَافَحَة) কিংবা বাংলায় করমর্দন বা হাত মেলানো বলে থাকে।
একে অপরের সাক্ষাতে এ মুসাফাহা করা সুন্নাত। সুন্নাতি এ আমল করে উভয়ে আলাদা হয়ে যাওয়ার আগেই মানুষের গোনাহ মাফ হয়ে যায়। হাদিসে এসেছে-
>> হজরত বারাআ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেছেন, ‘দুই জন মুসলিম পরস্পর মিলিত হয়ে মুসাফাহা করলে (তারা উভয়ে) পরস্পর বিচ্ছিন্ন (বিদায়) হওয়ার আগেই তাদের ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ (আবু দাউদ)
>> হজরত বারাআ ইবনে আজেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন দুই জন মুসলিম একত্রিত হয় অতপর মোসাফাহা করে এবং আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাদের উভয়কে ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ (আবু দাউদ)
ইমাম বুখারি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মুসাফাহার সুন্নাত হলো, পাস্পরিক সাক্ষাতে মুসাফাহা করবে, আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করবে আর (উভয়ে) বলবে-
يَغْفِرُ اللهُ لَنَا وَلَكُمْ
উচ্চারণ : ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়া লাকুম।
অর্থ : আল্লাহ তাআলা আমাকে এবং আপনাকে ক্ষমা করুন।’ (বুখারি)
সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে এ আমলের প্রচলন ছিল অনেক বেশি।মানুষের সঙ্গে পারস্পরিক সাক্ষাতে মুসাফাহা করার কথা বলেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে এসেছে-
>> হজরত আবুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে জানতে চাইলাম- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাদের মধ্যে কি মুসাফাহার প্রচলন ছিল? তিনি উত্তরে বললেন, ‘হ্যাঁ’।’ (বুখারি)
>> হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যখন ইয়েমেন থেকে লোকেরা আসলো, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তোমাদের কাছে ইয়েমেনবাসীরা এসেছে। তারাই এসে প্রথমে মুসাফাহা বা করমর্দন করছেন।’ (আবু দাউদ)
>> হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জানতে চেয়েছে যে-
- হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যকার কোনো ব্যক্তি যখন তার ভাই বা বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাত করবে, তখন কি সে তার সামনে মাথা ঝুঁকাবে? জবাবে তিনি বললেন, ‘না’।
- লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলো, সে কি তাকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করবে? উত্তরে তিনি বললেন, ‘না’।
- লোকটি আবার জানতে চাইলো, তাহলে কি সে বন্ধুর হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে মর্দন (মুসাফাহা) করবে? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’।’ (তিরমিজি)
সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের উচিত দেখা-সাক্ষাৎ হলে পরস্পরে মুসাফাহা বা করমর্দন করা। পাশাপাশি আল্লাহর প্রশংসাসহ ক্ষমা প্রার্থনা স্বরূপ উল্লেখিত দোয়া করা। আর তাতে সাক্ষাৎ শেষ করে চলে যাওয়ার আগেই আল্লাহ উভয়কে দ্রুত ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে মুসাফাহা করার মাধ্যমে দ্রুত গোনাহ থেকে মুক্তি লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।