রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর নির্দেশে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পরপরই সেখানে প্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন। আর তখন থেকেই মুসলমানদের সমবেত হওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী স্থানে পরিণত হয় আল্লাহর এ ঘর। আল্লাহর রসুলের সঙ্গে সাধারণ মানুষের দেখা-সাক্ষাৎ এবং তাঁর সব ভাষণ এই মসজিদে বসে দেওয়া হতো। দীনি আলোচনা ও বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে রসুলের সাক্ষাৎ হতো এই মসজিদেই। তাঁর ওফাতের পর খলিফাদের শাসনামলেও রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকান্ডসহ সব ধরনের ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মসজিদ।
মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হতো এই পবিত্র ঘরে বসেই। ইসলাম ছাড়া অন্যান্য ধর্মে উপাসনাকে গির্জা, মন্দির, প্যাগোডা ইত্যাদির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। এসব স্থানের বাইরে উপাসনা করার সুযোগ নেই। কিন্তু ইসলামে ইবাদত ও আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের নির্দিষ্ট কোনো স্থান বা সময় নেই। একজন মুসলমানের জন্য যে কোনো স্থানে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে ধর্মীয় বিধিবিধান পালনের সুযোগ রয়েছে। নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদ সর্বোত্তম স্থান। কিন্তু নামাজের সময় হলে যদি কাছাকাছি মসজিদ পাওয়া না যায় তাহলে আল্লাহর জমিনের যে কোনো স্থানে কেবলামুখী হয়ে নামাজ আদায় করতে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাবে।
এ ছাড়া একজন মুসলমানের দায়িত্ব হচ্ছে এই ধর্মীয় বিধিবিধান অন্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ইসলামে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার বিধান এখান থেকেই উৎসারিত হয়েছে। নিজেদের সামাজিক, রাজনৈতিক জীবনে যাতে এ বিধান পালন করা যায় সেজন্য মুসলমানদের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি প্রয়োজন। সে ঘাঁটি হিসেবে মসজিদের মতো আর কোনো স্থান হতে পারে না। মুসলমানদের চিন্তা ও আদর্শগত ভিত্তি শক্তিশালী করা হচ্ছে মসজিদের অন্যতম প্রধান কাজ। ইসলামের সাংস্কৃতিক ভিত্তি শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে মসজিদের ভূমিকা অপরিসীম। এই পবিত্র স্থান থেকেই সাধারণ মানুষকে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আদর্শ শিক্ষা দেওয়া হয় যাতে তারা শত্রুর সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এমনকি সামরিক আগ্রাসন থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।