আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। যে মানুষ আল্লাহ পথে ও মতে চলে আল্লাহ তাআলা তার দুনিয়া ও পরকালের সব চাহিদা পূরণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৯)
নেক আমলকারীকে সাহায্য করা কিংবা সঠিক পথে পরিচালনা করা আল্লাহ তাআলার ওয়াদা। আল্লাহ তাআলা ওয়াদা পালনে একনিষ্ঠ।
আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন অনেক মানুষ আছে যারা নেক আমল করে ঠিকই কিন্তু সামান্য ভুলের কারণে তাদের সে নেক আমল নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে মানুষের নেক আমল নষ্ট হয়ে যায়, তার ধরণগুলো এরকম-
> পাপকাজ জারি রেখে ভালো কাজের দাবি
মানুষ আল্লাহকে ভয় করা অনেক উত্তম গুণ। কিন্তু আল্লাহকে ভয় করার দাবি করা সত্ত্বেও পাপ কাজে জড়িত থাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে ভালো এ দাবি তখন নিষ্ফল হয়ে যায়। আল্লাহকে ভয় করার দাবি তখনই কার্যকারিতা পাবে যখন মানুষ পাপ কাজ ছেড়ে দেবে।
> নেক কাজ ছাড়া সাওয়াবের আশা
মানুষ আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদান আশা করে অথচ বাস্তবে উত্তম প্রতিদান লাভে নেক কাজ করে না। সাওয়াব লাভ করতে হলে অবশ্যই নেকে কাজ করতে হবে।
যদিও আল্লাহ তাআলা মানুষকে পাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারেন কিংবা নেক আমল ছাড়াও উত্তম প্রতিদান দিতে পারেন কিন্তু আল্লাহর সাধারণ রীতি হলো আল্লাহকে প্রকৃত ভয়কারীরাই পাপ থেকে বিরত থাকবে এবং নেক আমলকারীরাই উত্তম প্রতিদান লাভ করবে।
> ভালো কাজের নিয়তে গড়মিল
নেক কাজ করার ইচ্ছা আছে ঠিকই বাস্তবে নেক আমল করার একনিষ্ঠ নিয়ত নেই। নিয়তের এমন গড়মিল হলে কোনো কাজেই সফলতা আসবে না।
> অপরাধের কারণে লজ্জিত না হওয়া
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া অনেক বড় ভালো গুণ। কিন্তু অপরাধ করার পর তাতে লজ্জিত না হয়ে শুধু আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ায় কোনো লাভ নেই। অর্থাৎ মুখে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় অথচ অন্তরে লজ্জা অনুভব করে না। আর এরূপ ক্ষমা প্রার্থনায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।
> সংশোধনের চেষ্টা না থাকা
নিজেকে সংশোধন করার একান্ত ইচ্ছা ছাড়া শুধু বাহ্যিক লোক দেখানো নেককাজ পুরোপুরি অর্থহীন। যা কোনো কাজেই আসবে না। তাই নেক কাজের পাশাপাশি নিজের সংশোধনের চেষ্টা থাকা জরুরি।
> মেহনত ব্যতিত দোয়া
যে ব্যক্তি শুধু দোয়া করেই জীবনে সব চাওয়াগুলো পেতে চায় কিন্তু আমলের মাধ্যমে মোটেও নেককার হওয়ার চেষ্টা করে না। সে ব্যক্তি বঞ্চিতই থাকবে।
যে ব্যক্তি শুধু দোয়ার ওপর নির্ভর না করে ভালো কাজের মেহনত বা চেষ্টা করে সে ব্যক্তিই তাওফিক লাভ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আমার জন্য পরিশ্রম করে আমি অবশ্যই তাদেরকে সঠিক পথ দেখাব।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৯)
> ইখলাসবিহীন আমল
ইখলাস ব্যতিত মানুষের যে কোনো ভালো কাজের প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে। কারণ ইখলাসবিহীন আমল একেবারেই মূল্যহীন।
সুতরাং মানুষের উচিত শুধু মুখে মুখে ভালো কাজের কথা না বলে বাস্তবে একনিষ্ঠ নিয়তে ভালো কাজ করা। আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করা। ভালো কাজে মেহনত করা। নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করা। নিজের অপরাধে লজ্জিত হওয়া। গোনাহের কাজ ছেড়ে দেয়া এবং একনিষ্ঠতার সঙ্গে সব কাজ করার চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মুখে মুখে নেক কাজের উপদেশ নয় বরং তা কাজে বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।