জন্ম অনিশ্চিত, কিন্তু মৃত্যু সুনিশ্চিত। কোনো মানুষের সন্তান হবে কি হবে না, এমন নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারে না। এমন কথাও কেউ বলতে পারে না যে, তার সন্তান হবে না। আবার এমন কথা কেউ বলতে পারবে না যে, সে সন্তান জন্ম লাভ করবে। এর উভয়টিই মহান আল্লাহর এখতিয়ার।
পক্ষান্তরে কোনো মানুষ জন্মগ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে একটি বিষয় সুনিশ্চিত হয়ে যায় যে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তাকে অবশ্যই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। এর থেকে পালানোর কোনো পথ নেই। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে একথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন-
‘প্রত্যেক জীবনকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে।’
চিন্তার বিষয়
সকালে ঘুম থেকে জেগে ওঠা মানুষকে এ কথা বিশ্বাস রাখতে হবে যে, সন্ধ্যার সাক্ষাৎ তার নাও হতে পারে। সুতরাং মানুষকে এ বিষয়টি চিন্তা করেই জীবন-যাপন করতে হবে। মনে করতে হবে এ মুহূর্তটিই তার শেষে দিন বা শেষ সময়।
মানুষের উচিত এ রকম ভাবা যে, প্রতিটি দিনই তার জীবন জন্য নতুন দিন। যেন এখনই জন্ম গ্রহণ করেছে সে। আবার দিনের শেষেই মৃত্যুবরণ করবে। এমন চিন্তার অধিকারীর পক্ষেই সম্ভব গোনাহমুক্ত জীবন-যাপন করা। আর এ উপদেশ দিয়ে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-
‘(হে রাসুল!) আমি আপনাকে যা দান করেছি তা গ্রহণ করুন এবং কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভূক্ত হোন।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৩৪)
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি এমনই ছিল মহান আল্লাহর ঘোষণা। আর প্রিয় নবির মাধ্যমেই বিশ্ব মানবতা পেয়ে গেছে কুরআনের এ সংবাদ। যারা আল্লাহর দান-অনুদান, আদেশ-নিষেধ পালন করে জীবন সাজাবে তারাই আল্লাহর দফতরে কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করবে। এটাই মহান প্রভুর ঘোষণা।
যখনই মানুষ আল্লাহর দেয়া উপদেশ গ্রহণ করবে, প্রতিটি দিনকে নিজের জীবনের প্রথম দিন মনে করবে এবং দিনের শেষ বেলাকে জীবনের শেষ বেলা হিসেবে চিন্তা করবে, তখন আল্লাহ ও তার রাসুলের উপদেশ কাজে আসবে। দুনিয়া ও পরকালের সফলতাও সে লাভ করবে।
এভাবে চিন্তা করুন
বিগত দিনে যারা নিজের ভুলে কিংবা মনের অজান্তে অন্যায়মূলক কাজে সময় কাটিয়েছে, তাদের পেছনের দিনগুলো নিয়ে সময় নষ্ট না করে তাওবার সঙ্গে আগামীর দিনগুলোর সঠিক ব্যবহারই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
অতীতে সব দুঃশ্চিন্তা ও ভবিষ্যতের সব অনিশ্চিত আশা-আকাঙ্ক্ষর নেশা থেকে বেরিয়ে এসে শুধু আজকের দিনটিকে নিজেকে সঠিক পথে পরিচালনা করা। সারাদিন নিয়ে এভাবে চিন্তা করা উচিত-
- সারাদিন প্রতিটি কাজের সঙ্গে হৃদয়ে আল্লাহর স্মরণ বা প্রার্থনা জাগ্রত রাখা।
- কম হোক বুঝে-শুনে কুরআন তেলাওয়াত করা।
- প্রতিটি কাজেই ভারসাম্য ও নীতি-নৈতিকতা বজায় রাখা।
- তাকদিরের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস অটুট রাখা।
সর্বোাপরি সবার নারী-পুরষের পোশাক-পরিচ্ছেদ, সাজ-সজ্জা, বেশভূষা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক থাকা। তবেই পরিপূর্ণ সফলতা লাভ করা সম্ভব হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর জীবনের প্রতিটি দিনকে কুরআন-হাদিসের আলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন। সব অন্যায় ও অনাচার থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।