প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চিরস্থায়ী আপনজন হতে কী করবেন? কী এমন কাজ আছে, যে কাজ করলে সহজেই প্রিয়নবির আপন হওয়া যায়। কেয়ামতের কঠিন পরিস্থিতিতেও তারা ছোট ছোট সে আমলের কারণে তাঁর খুব কাছে থাকবেন। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের মুক্তির জন্য ছোট ছোট অনেক নসিহত পেশ করেছেন। যে নসিহতগুলোর আমল একেবারেই সহজ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে সেই ব্যক্তি, যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরূদ পাঠ করবে।’ (তিরমিজি)
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম প্রেরণের মর্যাদা ও গুরুত্ব কত বেশি, তা পবিত্র কুরআনে ওঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেন-
‘নিশ্চয় আল্লাহ (উর্ধ্ব জগতে ফেরেশতাদের মধ্যে) প্রিয়নবির প্রশংসা করেন এবং তার ফেরেশতাগণ প্রিয়নবির জন্য দোয়া করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবির ওপর দরূদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ৫৬)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। আর এ কারণেই অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত যে, কোনো ব্যক্তি যখন প্রিয়নবির নাম উল্লেখ করবে কিংবা শুনবে, তখন তার ওপর দরূদ পাঠ করা আবশ্যক হয়ে যাবে।’ (কুরতুবি, ফাতহুল কাদির)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই তার প্রতি দরূদ পাঠের ফজিলত বর্ণনা করে বলেন-
‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করবেন।’ (আবু দাউদ)
তিনি আরও বলেন, ‘যার সামনে আমার নাম উচ্চারিত হয় তার উচিত আমার ওপর দরূদ পাঠ করা। (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ)
প্রিয়নবি আরও বলেন, সেই ব্যক্তি কৃপণ, যার সামনে আমার নাম উচ্চারণ করা হলে (সে) দরূদ পাঠ করে না।’ (তিরমিজি),
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘সেই ব্যক্তি অপমানিত হোক, যার সামনে আমার উচ্চারণ করা হলে সালাত পাঠ করে না।’ (তিরমিজি)
পরিশেষে…
প্রিয়নবির নাম উচ্চারণ কিংবা শোনার পর যদি কেউ দরূদ পাঠ না করে তার পরিণাম প্রসঙ্গে জিবরিল আমিনের একটি ঘোষনা উল্লেখ করে শেষ করতে চাই। তাহলো- একবার প্রিয়নবি মসজিদে নববিতে খুতবা দিচ্ছেন। এমন সময় তিনি পরপর তিনবার আমিন বললেন।
সাবাহায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তিনবার আমিন বললেন কেন?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন জানালেন, (তন্মধ্যে একটি) ‘জিবরিল আমিন জানালেন যে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- যে ব্যক্তি আমার (প্রিয়নবির) নাম উচ্চারণ করলো কিংবা শুনলো কিন্তু আমার প্রতি দরূদ পাঠ করলো না, সে অভিশপ্ত।’ (নাউজুবিল্লাহ)
সুতরাং উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য সতর্কতা হলো- প্রিয়নবির নাম উচ্চারণ কিংবা শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রতি দরূদ পাঠ করা জরুরি।
আর প্রিয়নবি তো হাদিসে পাকে ঘোষণাই দিয়েছেন যে, যারা যত বেশি দরূদ পাঠ করবে, তারা কেয়ামতের দিন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ততবেশি নিকটবর্তী হবে।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির নাম উচ্চারণ কিংবা শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রতি দরূদ পড়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ায় রহমত লাভ এবং কেয়ামতের কঠিন সময়ে তাঁর সবচেয়ে নিকটবর্তী হতে বেশি বেশি দরূদ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।