'খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই স্বাধীনতার মুক্তি'

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ২৪শে আগস্ট ২০১৯ ০৩:২৬ অপরাহ্ন
'খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই স্বাধীনতার মুক্তি'

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, বর্তমান সরকার আমাদের আইনি অধিকার নিতে দিচ্ছে না। তাই আমাদের একটিই লক্ষ্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। তাই আজকে আমরা জনগণকে আহ্বান জানাতে চাই, আপনাদের গণতন্ত্রের মাতা আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আপনারা রাস্তায় নেমে আসুন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি, খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই স্বাধীনতার মুক্তি। তাই আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বার বার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব ইনশাআল্লাহ।

শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সেলিমা রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জনগণের জন্য কারারুদ্ধ। কারণ তিনি জানেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাকে মুক্ত করবেই। আর আজকে সমগ্র বাংলাদেশে আন্দোলন দানা বেঁধেছে। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা অপেক্ষা করছে কখন রাজপথে নামবে, কখন এ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তারা সাহস পাচ্ছে না, কারণ তাদের সন্তানকে, তাদের কন্যা সন্তানকে, তাদের কিশোরী সন্তানকে, তাদের শিশু সন্তানকে রাজপথে নামলেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী কিংবা প্রশাসনের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষণ করবে, না হয় হত্যা করবে।

সেলিমা রহমান আরও বলেন, এখন আমরা পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই চামড়ার দামে ধস নেমেছে, রড দিয়ে হামলা চলছে, খুন-গুম-হত্যা চলছে, শিশু-নারী হত্যা চলছে। আজকে মানুষ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না, কারণ তারা জানে আজকে যদি তারা কথা বলে তবে তাদের ওপর সন্ত্রাসী বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়বে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, কারণ বর্তমান ভোটারবিহীন যে সরকার মধ্যরাতের নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তারা তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে জোর করে কারাগারে আটকে রেখেছে। শুধু তাই নয়, তারা জনগণের ওপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জনগণকে কথা বলতে দিচ্ছে না। বিশেষ করে নারী ও শিশুর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। জাতীয়ভাবে আমাদের শুধু নারী ও শিশু নির্যাতন দিবস পালন করলে চলবে না; আমাদের সব নারী সমাজকে রাজপথে নেমে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য সন্ত্রাসী বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। সেই মিন্নিকে অন্যায়ভাবে আটক করে তার ওপর পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে। ক্ষমতায় থেকে যারা এ সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছে তাদের যাতে কোনো দোষ না হয় সে জন্য তারা নয়ন বন্ডকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আমরা জানি দেশে বিচার বলতে কোনো কিছু নেই। আমরা দেখেছি বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যা মামলায় জামিনযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তার জামিন হচ্ছে না; কারণ বিচার বিভাগ সরকারের হাতে বন্দি। তাদের রায় দেয়ার বা জামিন দেয়ার কোনো স্বাধীনতা নেই। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী আদালতের দরজায় দৌড়াচ্ছে। তাদের মিথ্যা মামলায় জামিন না দিয়ে আটকে রাখছে। এ অবস্থার মধ্যে আজকে আমাদের কী করতে হবে? আমাদের একটি কথাই মনে রাখতে হবে বেগম খালেদা জিয়া বলে গিয়েছিলেন, তোমরা ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন কর। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সমস্ত দেশের জনগণ জাগরিত হয়।

সেলিমা রহমান বলেন, আজকে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগের এক এমপি তিনি নিজেই বলেছেন, ডেঙ্গু আমাদের ওপর গজব নেমেছে, নমরুদের গজব। তাদের যে পাপ, তাদের যে অত্যাচার তারা তা উপলব্ধি করতে পেরেছে। তাদের যে নির্যাতন তা মহান আল্লাহ তায়ালা আর সহ্য করছেন না। তাই আজকে দেখুন এ মহামারিতে অতি দুর্নীতি ও অতিকথন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে নাই তারা উন্নয়নের বুলি দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে খুশি রাখার চেষ্টা করছে। সত্যিকার অর্থে যে উন্নয়ন সেই উন্নয়নের পরিবর্তে আজকের বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে যে কারণে অন্ন বস্ত্র, মৌলিক অধিকার, কথা বলার অধিকার, গণতন্ত্র সেই গণতন্ত্র আমাদের মাঝে নেই। তারা শুধু উন্নয়নের বুলি উড়িয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চলনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী নূরে আরা সাফা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব