গৃহবধূ থেকে দেশনেত্রী: সংগ্রামেই গড়া খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন

বিএনপির প্রেস উইং ও ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের জলপাইগুঁড়ির নয়াবস্তির এক ছোট শহরে তার জন্ম। জন্মনাম ছিল ‘শান্তি’। পরবর্তীতে পরিবারের আদরে তার নাম হয় ‘পুতুল’। শৈশবের পর পরিবার দিনাজপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। ১৯৬০ সালে দিনাজপুর সরকারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি এবং পরে দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেন।

কলেজে অধ্যয়নকালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৯৬৫ সালে ডিগ্রি কোর্সে পড়ার সময় তিনি স্বামীর কর্মস্থল পশ্চিম পাকিস্তানে যান। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা শুরু হলে চট্টগ্রামে অবস্থানরত মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

এই সময় বেগম খালেদা জিয়া চট্টগ্রামে কিছুদিন আত্মগোপনে থেকে পরে দুই পুত্রকে নিয়ে ঢাকায় আসেন। বড় বোন খুরশীদ জাহান হকের বাসায় আত্মগোপনে থাকলেও ২ জুলাই পাকিস্তানি সেনারা তাকে দুই সন্তানসহ বন্দী করে। দীর্ঘ সময় গৃহবন্দী থাকার পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার দিনে তিনি মুক্তি পান।

১৯৮১ সালের ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাজনীতিতে তার জীবন আমূল পরিবর্তিত হয়। এতদিনের গৃহবধূ খালেদা জিয়া দলের নেতাকর্মীদের আহ্বানে রাজপথে নামেন। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।

১৯৮২ সালে এরশাদের সামরিক শাসন শুরু হলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন খালেদা জিয়া। সাতদলীয় জোট গঠন করে তিনি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সাতবার কারাবরণ করেন তিনি। এই সময় জনগণ তাকে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।