প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১১:৩৪
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির পরিবেশে যে বিষাক্ততা ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিয়ে কড়া ভাষায় কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে বলেন, সংগঠনটি ছাত্র রাজনীতির পরিবেশকে টক্সিক করে তুলেছে, যা সাধারণ ছাত্রদের কণ্ঠরোধ করছে।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে উমামা লেখেন, যারা আগে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ছিল এবং সেই পরিচয়েই হলে প্রভাব খাটাতো, তারা এখন হঠাৎ করেই অন্যদের 'লীগ দোসর' হিসেবে চিহ্নিত করতে শুরু করেছে। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, মুখে সাধারণ শিক্ষার্থীর দাবিদার হলেও তারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থেই এসব কৌশল নিয়েছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে ছাত্রশিবিরের ভূমিকা এমন হয়েছে যেন তারা ‘সাধারণ ছাত্র’ সেজে বরাবরই ছাত্র আন্দোলনকে ভেতর থেকে ভাঙার চেষ্টা করছে। এর ফলে প্রকৃত সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ সীমিত হয়ে গেছে।
উমামা আরও অভিযোগ করেন, এই তথাকথিত সাধারণ ছাত্রদের আসল চেহারা বেরিয়ে আসে যখন তারা সত্যিকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেয় না। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ৮ মার্চ ধর্ষণের বিচারের দাবিতে মেয়েদের একটি মিছিলে হলপাড়া থেকে কেউই যোগ দেয়নি, অথচ সামান্য কোনো ইস্যুতেই তারা আগে মিছিল করত।
পোস্টে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তাও দেন তিনি। বলেন, যারা লীগ সরকারের সময় একটিবারও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়নি, তারা আজ নিজেদের রাজনৈতিক লাভের জন্য ‘নিরপেক্ষ’ সেজে মাঠে নামছে। এই ধরণের সুবিধাবাদীদের সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
উমামা স্মরণ করেন ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন বিরোধী আন্দোলনের কথা, যেখানে তারা রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন। তখন অনেকেই আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। এমনকি ঢাবির ভেতর থাকা তথাকথিত নিরপেক্ষ কিছু ছাত্র তখন নির্বাচনী ইস্যু বাদ দিয়ে ট্রান্সজেন্ডার কোটা নিয়ে ব্যস্ত ছিল।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এখন সেইসব তথাকথিত সাধারণ ছাত্র July মাসের আন্দোলনের নেতৃত্ব নেওয়ার দাবি করছে, অথচ বাস্তবতা হচ্ছে তারাই আন্দোলনকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। তাদের হাতে ‘জুলাই’ও নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই পোস্টের মাধ্যমে উমামা ফাতেমা আবারও দেখিয়ে দিলেন, ছাত্র রাজনীতিতে শুধু মুখের কথায় নয়, কাজের মাধ্যমেই প্রকৃত নেতৃত্ব প্রমাণিত হয়।