গুমের অভিযোগে প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় সম্প্রতি ২২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য চাকরি হারিয়েছেন। গত ১৫ বছর ধরে গুমের ঘটনা নিয়ে একাধিক অভিযোগ থাকলেও তা কোনো সরকারই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। তবে, এখন গুম কমিশনের রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। রবিবার গুম কমিশনের সুপারিশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গুম কমিশনের তথ্যমতে, এই ২২ জন সদস্যের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগে প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে, যা তাদের চাকরি হারানোর পেছনে মূল কারণ। গুমের এই অভিযোগগুলো মূলত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে, যাদের বিরুদ্ধে নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। কমিশন তাদের বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চালাবে এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে আরও সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া, গুম কমিশন এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণেরও সুপারিশ করেছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। গুমের এই অভিযোগগুলি একদিকে যেমন রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মর্যাদার প্রশ্ন তুলে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
গুমের ঘটনা নিয়ে সরকার আগে কখনও কোনো তদন্ত শুরু করেনি, তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য আলাদা একটি কমিশন গঠন করেছিল। গুম কমিশন জানিয়েছে, তাদের কাছে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে, যা আসলেই উদ্বেগজনক। কমিশনের তথ্যমতে, এই অভিযোগগুলোর অধিকাংশই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এদিকে, গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য সরকার এখনও কোনো সমাধানমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কিন্তু কমিশনের প্রাথমিক রিপোর্টের পর, প্রমাণিত হলে আরও সদস্যদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের গুমের ঘটনা ও তার বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, যা সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।