দিনমজুর সংকটে বোরো আবাদে হিমশিম মহালছড়ির কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরিফুল ইসলাম মহিন -খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৯ অপরাহ্ন
দিনমজুর সংকটে বোরো আবাদে হিমশিম মহালছড়ির কৃষকরা

খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ পুরোদমে শুরু হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা জমিতে বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, এবারের আবাদ মৌসুমে দিনমজুর সংকট এবং খরচ বৃদ্ধির কারণে কৃষকেরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন।


সরেজমিনে দেখা যায়, মহালছড়ি সদর সংলগ্ন ছৌংড়া ছড়ি মুখ, মহাজন পাড়া, ভুয়াততে পাড়া, মুবাছড়ি ইউনিয়নের ব্রীজপাড়া, মোহামনিপাড়া, হ্যাডম্যানপাড়া, মনাটেকসহ বিভিন্ন গ্রামে বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ চলছে।


মুবাছড়ি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য চিকু চাকমা জানান, প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে গেলে জমি চাষের উপযোগী হয়ে ওঠে। তবে এবার দিনমজুর খরচ অনেক বেড়েছে। একজন পুরুষ দিনমজুরের মজুরি ৬০০ টাকা এবং নারীর মজুরি ৪০০ টাকা। এক বিঘা জমিতে ধান রোপণে খরচ হচ্ছে প্রায় ৩,৫০০ টাকা।


মনাটেক গ্রামের কৃষক অটুল চাকমা বলেন, “আমি ছয় বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছি। এই ফসলের উপরই আমাদের পুরো বছরের খাদ্যের যোগান নির্ভর করে। সঠিক সময়ে ফসল ঘরে তুলতে পারলে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া এবং সংসারের অন্যান্য খরচ চালানো সম্ভব।”


এদিকে, একজন দিনমজুর মিলি চাকমা জানান, তাদের গ্রুপের ১৩ জন সদস্য মিলে জমিতে কাজ করছেন। নিজের জমিতে সাহায্য সহযোগিতা করলেও অন্যদের জমিতে চারা রোপণের জন্য বিঘাপ্রতি ৩,৫০০ টাকা করে নিচ্ছেন।


মহালছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নুর মোহাম্মদ রসুল জানান, বোরো ধানের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি। সঠিক বয়সে চারা রোপণ করলে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া সম্ভব। চলতি মৌসুমে মহালছড়ি উপজেলায় ১৩৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ৩৮০ হেক্টর জমিতে উফশী ধান চাষ করা হবে।


দিনমজুর সংকট এবং খরচ বৃদ্ধির কারণে কৃষকেরা চ্যালেঞ্জের মুখে থাকলেও সঠিক ব্যবস্থাপনায় ফলন ভালো হলে তাদের কষ্ট সফলতায় পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।