সিরাজগঞ্জের সলংগা ও তাড়াশে পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে অনাবাদি হয়ে গেছে। এতে এখানকার কৃষকদের সামনে বিপদের হুঁশিয়ারি, কারণ জমি থাকলেও চাষাবাদ করতে না পারায় তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা একদমই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সলংগার আগরপুর ও খোদ্রশিমলা অঞ্চলের কয়েক হাজার বিঘা জমি এখনও ৫-৬ ফুট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এসব জমিতে আগামী ইরি-বোরো চাষও সম্ভব হবে না, কারণ জলাবদ্ধতার কারণে জমি সেচ করা বা পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে এলাকার কৃষকরা এখন কেবল পানি নিষ্কাশনের জন্য অপেক্ষা করছেন।
এ অঞ্চলে যত্রতত্র পুকুর খনন এবং অপরিকল্পিত জলবদ্ধতার জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সরকারি আইন থাকা সত্ত্বেও পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে, যা জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি, পানি নিষ্কাশনের জন্য উপযুক্ত খালের অভাবেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এই জলাবদ্ধতার কারণে আবাদি জমির বেশির ভাগই পতিত হয়ে গেছে।
তাড়াশের সরাপপুর ও ঝুরঝুরি গ্রামেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানেও জলাবদ্ধতার কারণে হাজার হাজার বিঘা জমি অনাবাদি রয়েছে, এবং কৃষকরা জমি লিজ বা বন্ধক রাখতেও আগ্রহী হচ্ছেন না। এর ফলে শুধু কৃষকদের আয়ই হুমকির মুখে পড়েনি, বরং খাদ্য উৎপাদনে বিরাট ঘাটতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ ধরনের পরিস্থিতি চলতে থাকলে কৃষি নির্ভর এই দেশের জন্য খাদ্য সংকট একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে, এবং আমাদের আমদানি নির্ভর দেশ হিসেবে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। কৃষকদের এই দুর্ভোগের জন্য দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
সিরাজগঞ্জের কৃষকদের দুর্দশা দূর করতে পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনা জরুরি হয়ে পড়েছে। এর জন্য সরকারের সহযোগিতা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এলাকাবাসী আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
**মোঃ শামছুল হক, সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা**
তারিখ: ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।