অবসরে পাঠানো হচ্ছে ২৫ হাজার পাটকল শ্রমিককে
কয়েকদিন ধরেই চাউর হচ্ছিলো যে পাটকলগুলো শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে সারা দেশের ২৬টি পাটকলের শ্রমিকরা আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। এর মধ্যেই বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানালেন।
পাটমন্ত্রী বলেন, লোকসানে থাকা পাটকলগুলোকে লাভজনক করার উপায় নিয়ে ছয় মাস ধরে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। ৪০ বছর ধরে আমরা কোনো লাভ করতে পারিনি। সবসময় লোকসান হচ্ছে। সরকার চিন্তা করছে কীভাবে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিকদের সব টাকা বুঝিয়ে দিয়ে এই কারখানাগুলোকে আবার চালু করে আমাদের পাটখাতকে এগিয়ে নেয়া যায়।
গত ৪৮ বছরে সরকারকে এ খাতে ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে জানিয়ে বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, পাটকলগুলোতে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিকদের চাকরির অবসান করতে। পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দেয়ার পর পিপিপির মাধ্যমে পাটকলগুলোকে আধুনিকায়ন করে উৎপাদনমুখী করা হবে। তখন এসব শ্রমিক সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ পাবেন।
সচিব বলেন, ২০১৩ থেকে এ পর্যন্ত আট হাজার ৯৫৪ জন পাটকল শ্রমিক অবসরে গেছেন। অর্থ সংকটে তাদের অবসর ভাতা পরিশোধ সম্ভব হয়নি। তারা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তাদের পাওনা বাবদ এক হাজার ৩০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এদিকে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে যৌথভাবে আন্দোলনে যাচ্ছে পাটকল শ্রমিক লীগ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ ও নন-সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, এ সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। পিপিপির মাধ্যমে পাটকল চালানোর পক্ষে আমরা না। আমরা চাই, ‘নো ওয়ার্ক-নো পে’ নীতিতে সরকারের নিয়ন্ত্রণেই পাটকল চলবে। আমরা পাটকল শ্রমিক লীগ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ ও নন-সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ যুগপৎ আন্দোলন করব। এ বিষয়ে সোমবার শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।