পুলিশ-র‌্যাব ও ডিবির পোশাকে ছাত্রলীগ নেতার ছিনতাই চক্র!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শনিবার ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
পুলিশ-র‌্যাব ও ডিবির পোশাকে ছাত্রলীগ নেতার ছিনতাই চক্র!

র‌্যাব, ডিবি আবার কখনও পুলিশের পোশাক পরে সারাদেশে ছিনতাইকারী একটি অপরাধ চক্রকে চিহ্নিত করেছে পিবিআই। এই সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন খোদ ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

পিবিআই সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক পরে ডাকাতি-ছিনতাই করা এই সংঘবদ্ধ চক্রের মূল হোতা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুব্রত হালদার বাপ্পী। তার অন্যতম দুই সেকেন্ড ইন কমান্ড মেহেদী হাসান ও আশিক পারভেজ। তারা দু’জনও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী। এই চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও কয়েকজনের নাম পেয়েছে পিবিআই।

এদের মধ্যে ইমরান, সজীব, রাকিব ও ইউসুফ উল্লেখযোগ্য। ইমরান ও সজীবও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী ও বাপ্পীর অনুসারী বলে পিবিআই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পিবিআই’র ঢাকা মেট্রো প্রধান বিশেষ পুলিশ সুপার বশীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা তদন্তে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছি। তদন্ত চলছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এই চক্রটি অনেক জায়গায় ডাকাতি ও ছিনতাই করেছে। আমরা প্রত্যেকটি বিষয়ই খতিয়ে দেখছি।’

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তারা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী মেহেদী হাসান ও আশিক পারভেজকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর দারুস সালাম থেকে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে স্বাধীন ও কলেজ গেট এলাকা থেকে আলমগীর খাঁকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে মেহেদী হাসান ছাড়া বাকি তিন জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তিনজনই তাদের জবানবন্দিতে র‌্যাবর পোশাকে টাকা লুটের ওই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সুব্রত হালদার বাপ্পী বলে উল্লেখ করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) পুলিশ পরিদর্শক কামাল হোসেন বলেন, ‘আটক আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত ও ছিনতাইকারী দলের সদস্য। তারা কখনও র‌্যাব, কখনও ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রথমে অপহরণ ও পরে ডাকাতি করে সর্বস্ব লুটে নেয়। তারা সোর্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীদের বড় অঙ্কের নগদ টাকার লেনদেন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। পরে টাকাপয়সা নিয়ে যাওয়ার সময় অনুসরণ করে। পথে কোনও এক জায়গা থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের কাছে অবৈধ জিনিস আছে বলে আটক করে এবং তাদের নির্ধারিত মাইক্রোবাসে করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে নিরিবিলি ও সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা টাকাপয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।’

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, বাপ্পীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের প্রমাণ পেলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেবো। তার বিরুদ্ধে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেবো। বাপ্পী আমাকে বললো যে সে ওই ঘটনায় জড়িত নয়।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব