নরসিংদীর পলাশে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে রাতভর আটকে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় বন্ধুদের সহযোগিতায় সম্রাট নামে এক বখাটে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে রাতভর ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে আপোস মীমাংসা করার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীর বয়স গোপন করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে
বিয়ের ঘোষণা দেন। পরে ছাত্রীর বয়স লুকিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর নিয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে। তবে শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবী, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে জালিয়াতি করে ওই শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর নিলেও সংশ্লিষ্ট আইনজীবী তাতে ধর্ষণের ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারির তারিখ দেখিয়ে নোটারী পাবলিক সম্পন্ন করেছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ভুক্তভোগি ওই ছাত্রীর পরিবার নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে আইনগত সহায়তা চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে নড়েচড়ে বসেছে জেলার আইন শৃংখলা বাহিনী।
ভুক্তভোগি ওই ছাত্রীর মা জানান, গত ১৪ তারিখ শুক্রবার রাতে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বাড়ির পাশে একটি ওরজ শরীফের অনুষ্ঠানে যায় ওই ছাত্রীটি। অনুষ্ঠানের ফাঁকে সে একটি দোকানে গেলে পলাশ উপজেলার পলাশের চর গ্রামের আবদুল বাছেদের ছেলে মো. সম্রাট মিয়া, তার দুই সহযোগি নয়ন ও আকরামের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে সম্রাট মিয়ার নিজ বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর ধর্ষণ চালায়।এদিকে সারারাত ছাত্রীটিকে খোঁজাখুজি করেও পাওয়া যায়নি।
পরদিন শনিবার সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরে অচেতন অবস্থায় সম্রাটের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওই ছাত্রী তাঁর পরিবারকে জানায় সম্রাট তাকে অচেতন করে রাতভর ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি পরিবার আইনের আশ্রয় নেওয়ার আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মনিরুজ্জামান আজাদের কাছে বিষয়টি অবগত করলে তিনি এটি আপোস মীমাংসা করে দিবে বলে জানায়।পাশাপাশি কোনো আইনি সহযোগিতা সমস্যায় পড়বে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে একই দিন বিকালে সম্রাট ও তার দুই সহযোগির নামে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ূন কবির জানান, মঙ্গলবার বিকালে ভুক্তভোগি ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সম্রাট ও তার দুই সহযোগির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।