সরাইলে রকেট হত্যা মামলায় ৭ জন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো: তাসলিম উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: রবিবার ১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১২:১০ অপরাহ্ন
সরাইলে রকেট হত্যা মামলায় ৭ জন গ্রেফতার

সরাইল উপজেলার আলোচিত "রকেট মেম্বার হত্যাকাণ্ডে" ২২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে শুক্রবার রাতে (১৪ ফেব্রুয়ারি) সরাইল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বাদী নিহত রকেট মেম্বারের ছেলে শাহনেওয়াজ রনি। 

এদিকে হত্যাকাণ্ডের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটোর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করেছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত আছে। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে এলাকা শান্ত আছে। 

উল্লেখ্য, নিহত আবু বকর ছিদ্দিক রকেট সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য। তিনি উপজেলা সদরের বেপারিপাড়া গ্রামের মৃত চমক বেপারির ছেলে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা সদরে প্রাতঃবাজারে আচমকা ১৫ থেকে ২০ জন লোক পর পর দু'টি হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর তারা রকেট মেম্বারের ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে তাঁর একটি হাত ও পা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এসময় রকেট মেম্বার বাজারে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়ানো ছিলেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জেলা সদরের  কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

মামলার যারা আসামিরা হলেন- সরাইল সদরের বেপারিপাড়ার মৃত ধনু বেপারির ছেলে আরমান মিয়া, স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহ আলম মিয়া, আজমান মিয়া, আরমান মিয়ার ছেলে রিয়াদ মিয়া ও হৃদয় মিয়া, আজমান মিয়ার ছেলে ফরহাদ মিয়া ও রাশেদ মিয়া, জেলা শহরের কান্দিপাড়ার ইয়াছিদন মিয়ার ছেলে রিকসন মিয়া, মৃত পাঠান মিয়ার ছেলে আকরাম মিয়া ও আনোয়ার হোসেন, বাদল মিয়ার ছেলে হামীম মিয়া, সরাইল বেপারিপাড়ার শাহ আলম মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া, আজমান মিয়ার ছেলে জয়, কালিকচ্ছ বেপারিপাড়ার মৃত কুমেদ আলীর ছেলে কাচু মিয়া, মৃত রমজান মিয়ার ছেলে আনার মিয়া, সদরের স্বল্প নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত অদুদ মিয়ার ছেলে, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সরাইল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শের আলম মিয়া, কালিকচ্ছ বেপারিপাড়ার শাহেদ মিয়ার ছেলে মিটন মিয়া, জেলা শহরের কাজীপাড়ার ইয়াছিন মিয়া, সদরের বেপারিপাড়ার মৃত তারু মিয়ার ছেলে দৌলত মিয়া, নাজু মিয়ার ছেলে ওসমান গনি ওরফে রোপম, সদরের দক্ষিণ আরিফাইল গ্রামের মৃত আবদুল আলীর ছেলে মিছির আলী এবং স্বল্প নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে নান্নু মিয়া।

এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে পুলিশের অভিযানে আটক সাত আসামী হলেন- নান্নু মিয়া, কাচু মিয়া ও তার ছেলে শরীফ মিয়া, রিকসন মিয়া, আকরাম মিয়া, আনোয়ার হোসেন ও হামীম মিয়া।

সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো সাংবাদিকেদর জানান, রকেট মেম্বার ও শাহ আলম মেম্বারের মধ্যে গোষ্ঠীগত পূর্ব বিরোধ ছিল। তাদের মধ্যে একাধিক মামলাও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। শাহ আলম মেম্বারের লোকজন পরিকল্পনা করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাজারে রকেট মেম্বারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা ইতোমধ্যে এ ঘটনার সাথে জড়িত সাতজনকে গ্রেফতার করেছি।

তাদের মধ্যে একজন এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে এবং এ হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পুলিশকে জানিয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে। এলাকা শান্ত রয়েছে। ওসি সাহাদাত হোসেন জানান, আমরা এই হত্যাকাণ্ডকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে দেখছি। অভিযুক্ত কেউ রেহাই পাবে না। 
ইনিউজ ৭১/এম.আর