বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাংলোর জন্য ৬৬ টন এসি কিনবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই এসির উৎপাদন দেখতে এবার মালয়েশিয়া যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দুজন কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন কমন সার্ভিস বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মোতালেব মাতুব্বর ও সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান। এসি দেখার জন্য কর্মকর্তাদের বিদেশে যাওয়াকে সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখছেন অন্য কর্মকর্তারা।তাঁরা বলছেন, এমনিতে অন্য কাজে যায়, ঠিক আছে। কিন্তু এসি দেখার জন্য কর্মকর্তাদের বিদেশে যাওয়ার অনুমতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। বরং এর মাধ্যমে তাঁদের আনন্দ ভ্রমণের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। আসলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।
জানা গেছে, আগামী ১২ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই দুই কর্মকর্তা মালয়েশিয়া ভ্রমণ করবেন। আর এই ভ্রমণের যাতায়াতসহ সব ব্যয় বহন করবে এসি সরবরাহকারী স্থানীয় প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড এনার্জি কনজারভেশন। আজ মঙ্গলবার তাঁরা মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে ওই দুই কর্মকর্তার বিদেশ যাওয়ার অনুমতিসংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এসির প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশনের জন্য এ দুজন কর্মকর্তাকে আগামী ১২ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মালয়েশিয়া ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হলো। যখন তাঁরা ভ্রমণ করবেন তখন অন ডিউটিতে থাকবেন। অনুমোদন ছাড়া অতিরিক্ত সময় সেখানে থাকতে পারবেন না। যে কয়েক দিন তাঁরা বিদেশে থাকবেন, ওই কয়েক দিনের বেতন স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করা হবে।
জানা যায়, রাজধানীর গুলশান-২ এ বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনতলা গভর্নর বাংলোর জন্য ৬৬ টিআর ক্যাপাসিটির ভিআরপি সিস্টেমের এসি কিনতে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর দরপত্র আহ্বান করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই বছরের ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই দরপত্রের আবেদন নেওয়া হয়। দরপত্রে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন ৯০ লাখ টাকায় এসি সরবরাহ করার এই কাজ পায় প্যাসিফিক মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড এনার্জি কনজারভেশন। এ প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়ার কম্পানি কুলম্যান ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশি এজেন্ট।
সূত্র বলছে, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন যাঁরা করতে যাচ্ছেন তাঁরা তো শুধু চোখের দেখাই দেখবেন। চোখের দেখাটা খুব বেশি মিন করে না। সেগুলো আসল না নকল সেটি যাচাইয়ের যন্ত্রপাতি তো সঙ্গে নেবেন না। তা ছাড়া ওই কর্মকর্তারা পণ্যের জাহাজীকরণ পর্যন্ত তো আর সঙ্গে থাকবেন না। ফলে তাঁদের একটি দেখিয়ে অন্যটি দিলেও বোঝার উপায় নেই। এর পরিবর্তে তৃতীয় কম্পানির লোকদের দিয়ে এ ধরনের ইন্সপেকশন করানো হলে সেটা আরো যথাযথ হতো। কারণ তারা পণ্য জাহাজীকরণ পর্যন্ত সঙ্গে থাকত। ফলে অসংগতি হওয়ার সুযোগ কম থাকত। তা ছাড়া তৃতীয় কম্পানির লোক দিয়ে এটা করালে খরচও কম হতো। ফলে খরচ কমত এবং কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হতো। কমন সার্ভিসেস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তফাজ্জল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের রুলসই আছে দরপত্রে এ রকম একটা অপশন রাখার। কেনাকাটার বিধিমালায় এটা বলা আছে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।