চীনে ছড়িয়ে পরা করোনা ভাইরাস ও একটি অর্থনৈতিক ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
চীনে ছড়িয়ে পরা করোনা ভাইরাস ও একটি অর্থনৈতিক ভাবনা

সাম্প্রতিক সময়ে চীনে ছড়িয়ে পরা একটি নতুন প্রজাতির ভাইরাস যার নাম নোভেল করোনা ভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রভাবে চীনে দেখা দিয়েছে মহামারী । যদিও বিভিন্ন গনমাধ্যমের সূত্রে এই মহামারীতে চীনে মৃত ও আক্রান্ত হওয়ার যথেষ্ট তথ্য বিভ্রাট রয়েছে। তবে গত ৪ফেব্রুয়ারী ২০২০ এর বিবিসির চায়না প্রতিনিধির দেয়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায় চীনের রাস্তাঘাট এবং শপিংমল গুলো একেবারেই জনশূন্য । তাছাড়া চীনের পুলিশ বিবিসির চায়না প্রতিনিধিকে সংবাদ  সংগ্রহ করতে বাঁধা দিচ্ছে। উক্ত ভিডিও চিত্র বলে দিচ্ছে চীনের প্রশাসন করোনা ভাইরাসের মহামারীর প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করতে চায়না।

সে যাইহোক প্রতিটি দেশের একটি স্বকীয় রাষ্ট্রীয় নীতিমালা আছে যে ব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই।আমি যে বিষয়টি নিয়ে ভাবছি, সেই বিষয়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত উপলব্ধি এখানে তুলে ধরছি। আমার এই ভাবনার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।  এটা যার যার ব্যক্তি স্বাধীনতা ।চীনের এই মহামারী এর পাশ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল এবং মায়ানমারেও ছড়িয়ে পরেছে।ব্যাপক আসংখ্যা আছে আমাদের দেশেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পরার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যেই ব্যাপক সতর্কতা এবং পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে অথচ আমরা বেশ উদাসীন । কিছু মানুষের মধ্যে শুধুমাত্র মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা ছাড়া রাষ্ট্রীয় ভাবে কোন প্রস্তুতি তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। 

শুধুমাত্র বিমানবন্দরে একটু আধটু কর্মসূচী চোখে পড়লেও আমাদের সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন প্রবেশ পথে কোন প্রস্তুতির সংবাদ তেমন চোখে পরছে না ।বিভিন্ন মানুষ এই মহামারীর ব্যপারে বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করছেন। ইসলামী চিন্তাবিদদের ধারনা চীনের উপর  এটা সৃষ্টিকর্তার আজাব (গজব)। কারন হিসেবে উইঘোর মুসলিম অত্যাচার বিষয়কে তুলে ধরছেন তারা। অন্য একটি মহল ভাবছেন চীনাদের অদ্ভুত খাদ্যাভ্যাস এই ভাইরাসের কারন, বিভিন্ন রাজনৈতিক গবেষকদের মতে এটি একটি মারণাস্ত্র ভাইরাস যা চীন আবিষ্কার করেছে হয়তো ভুলবসত এটি গবেষণাগার থেকে বিস্কোরিত হওয়ার ফলে এটি চীন দেশে ছড়িয়ে পরেছে।আমার কাছে অবশ্য এ ভাইরাসে ছড়িয়ে পড়ার কোন সঠিক কারন জানা নেই। 

এবারে আসি মুল আলোচনায়। 

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় চীন ব্যাপক চেষ্টা করে যাচ্ছে পাশাপাশি বিশ্বের কাছে এর মোকাবেলায় সহযোগিতাও চাইছে। যদি দ্রুত এই মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে চীনে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা দেখা দেবে। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চীনের অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল করেছে। তাছাড়া রপ্তানি পন্য পরিবহনেও দেখা দিয়েছে সংকট । বিভিন্ন বৈদেশিক সমুদ্র বন্দরগুলো চীনের কনটেইনার বহনকারী জাহাজ বন্দরে ভিরতে দিতে অস্বীকৃত জানাচ্ছে । পাশাপাশি চীনের প্রবাসী নাগরিকরা দেশে ফেরা এবং বিদেশ ভ্রমণেও হচ্ছেন বাধাগ্রস্থ । চীনের উৎপাদনমূখি শিল্প কারখানা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে ।এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চায়না পন্যের সংকট দেখা দেবে এবং পন্য সল্পতার কারনে মুল্যস্ফ্রীতি দেখা দেবে।

চীন সূই থেকে শুরুকরে পারমাণবিক বোমা পর্যন্ত তৈরি করে। চীনের পন্য তুলনামূলক ভাবে কমমূল্য হওয়ার কারনে সারা বিশ্বে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । তাছাড়া এমন কিছু পণ্য  আছে যা শুধুমাত্র চীনেই উৎপাদন হয় এবং তুলনামূলক কম মূল্যমানের হওয়ার ফলে ঐ সমস্ত পণ্য বিশ্বের অন্য কোন দেশ উৎপাদন করে না।করোনা ভাইরাসের এই মহামারী যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে গোটা বিশ্বে ব্যাপক একটা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা দেখা দেবে বলে আমি মনে করছি।আশা রাখছি চীন অচিরেই এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসবে এবং গোটা বিশ্বের মানুষ  করোন ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাবে। পাশাপাশি অর্থনেতিক বিপর্যয় থেকেও রক্ষা পাবে ।