অপরাধীর কোনও দল নেই: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:৩২ অপরাহ্ন
অপরাধীর কোনও দল নেই: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

অপরাধী যতই বড় হোক তার বিচার হবেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অপরাধীর কোনও দল নেই, তার পরিচয় কেবলই অপরাধী এবং অপরাধী যত শক্তিশালীই হোক না কেন তার বিচার হবেই। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে রোম সফরে রয়েছেন। সংসদের বিধি অনুযায়ী যেকোনও সংসদ সদস্য অনুপস্থিত থেকেও তার লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে এবং প্রভাবমুক্ত থেকে বিচারকাজ পরিচালনা করছে। আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে বিচার বিভাগ জনগণের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। আমরা জনগণের মাঝে এই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে বিচার বিভাগ দেশের বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, সিলেটের শিশু রাজন ও খুলনার শিশু রাকিব হত্যা মামলা, নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর ৭ খুন মামলা এবং জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা মামলাসহ চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর রায় প্রদান করেছে। তাছাড়া হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং জঙ্গিবাদকে উসকে দেওয়ার চক্রান্ত করা হয়েছিল। হলি আর্টিজান মামলায় ৭ জন আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করে বিচার নিষ্পত্তির মাধ্যমে এই চক্রান্তকে রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেনীর নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলা, ঢাকার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুমাইয়া রিশা হত্যা মামলা, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দিয়া খানম মিম ও আব্দুল করিম রাজীবের মামলা, গাইবান্ধার সংসদ সদস্য লিটন হত্যা মামলাসহ বহুল আলোচিত মামল দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব হত্যাকাণ্ড শুধু আলোচিত ঘটনাই নয়, এসব হত্যাকাণ্ড মানুষের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়েরই নামান্তর। কিন্তু আমরা বিচার বিভাগের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে এসব মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি, ফলে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রকৃত দোষী আসামিরা যাতে সাজা পায় এবং নিরাপরাধ, নিরীহরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সরকার সজাগ রয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আমরা বিচার বিভাগে নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছি। সরকারি দলের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ যেখানে যায়, সেখানেই সম্মান পায়।

সরকারি দলের মুহিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করেছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা নির্বাচিত হয়েছেন। এই ব্যবস্থার পরিবর্তে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা পরিষদ গঠনের কোনও পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই বলে জানান তিনি।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব