
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০১৯, ১৮:৪৮

রোহিঙ্গা ইস্যুতে হাল সময়ের আলোচিত একটি নাম মুহিবুল্লাহ। রোহিঙ্গাদের যত সংগঠন ও নেতা রয়েছেন এদের সবাইকে ছাপিয়ে গেছে মুহিবুল্লাহ ও তার সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানরাইটস। ইউএনএইচসিআরের কক্সবাজার অঞ্চলে নিয়োজিত কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকা মুহিবুল্লাহ এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩২ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে আছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে সাক্ষাৎ করে আসার পর প্রত্যাবাসন কর্মসূচি প্রায় এককভাবে ঠেকিয়ে দিয়ে মুহিবুল্লাহ বিদেশি এনজিওগুলোকেও তার হাতের মুঠিতে নিয়ে নিয়েছেন।পরে লাখো রোহিঙ্গার সমাবেশ ঘটিয়ে আলোচনার তুঙ্গে এনেছেন নিজেকে। সবার প্রশ্ন- কে এই মুহিবুল্লাহ? কীভাবে তিনি হঠাৎ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার এত বড় নেতা হয়ে গেলেন? জানা যায়, গত আগস্টের প্রথম সপ্তাহে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হঠাৎ করেই খবর আসে ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসের দিনক্ষণ ঠিক করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। বিদেশি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মিয়ানমার থেকে প্রকাশ করা এই খবরে শুধু উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় নয়, কক্সবাজার শহরে থাকা বিদেশি এনজিওগুলোর মধ্যেও তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

কিন্তু ২০১৭ সালে রোহিঙ্গার ঢল নামার পর পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। সুস্পষ্টভাবে মুহিবুল্লার আজকের অবস্থানের মূল উত্থান হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআরকে সংযুক্ত করার পর। রোহিঙ্গাদের বক্তব্য জানার চেষ্টা থেকেই মদদ পায় মুহিবুল্লাহর সংগঠন এআরএসপিএইচ। ইংরেজি ভাষা ও রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন বিদেশিদের। ২০১৮-এর জুলাইয়ে র্যাব একবার মুহিবুল্লাহকে আটক করে উখিয়া থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশে কোনো প্রকার রেকর্ড ছাড়াই তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর গত এক বছরে জাতিসংঘ মহাসচিবসহ যত বিদেশি প্রতিনিধি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে মুহিবুল্লাহ ও তার সঙ্গীদের সাক্ষাৎ করানো হয়েছে। এই মুহিবুল্লাহই মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ১৭ দেশের যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২৭ প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করেন সেখানেও যোগ দেন মুহিবুল্লাহ। যুক্তরাষ্ট্রে এ সফর ও এর আগে একাধিক দফায় মধ্যপ্রাচ্য সফর করলেও মহাসমাবেশের আগে মুহ্বিুল্লাহর বিদেশযাত্রা নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। মহাসমাবেশের পর সমালোচনা হলে কক্সবাজার প্রশাসনের সূত্রগুলো জানায়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আডটপাসের ওপর ভিসা ইস্যু করে নিজ দায়িত্বে সফর আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলো। পরে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তার এক্সিটপাসে বিদেশযাত্রার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
