পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ এবং নতুন স্বপ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ১৩ই জুলাই ২০১৯ ০৬:০৭ অপরাহ্ন
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ এবং নতুন স্বপ্ন

বেশ কিছু দিন ধরে সারাদেশে চলছে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া। গত ২২ জুন থেকে ৯ হাজার ৬৮০ জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এটি সম্পন্ন হয় ৯ জুলাই। এবার পুলিশ কনস্টেবল পদে মনোনীত হয়েছেন ছয় হাজার ৮০০ পুরুষ ও দুই হাজার ৮৮০ নারী। এ ব্যাপারে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুশাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারের জায়গা থেকে এবার পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবার। এই নিয়োগ পক্রিয়ার জন্য সত্যিকারে সারাদেশে পুলিশের বেশ ভাবমূর্তি উজ্জ্বল বা বেশ সোরগোল হয়েছে। আমরা প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন এলাকার বা কোন না কোন এসপি সাহেবদের অবদান দেখছি বা শুনেছি গণমাধ্যমের কল্যাণে।

অনেকটা এমন প্রতিযোগিতা হয়েছে যে কে কার থেকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারে। তাই সারাদেশ থেকে বাহাবা পাচ্ছিল পুলিশ প্রশাসন। এবারের পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়াতে ভিন্নতা লক্ষ করা গেছে যে প্রান্তিক জনগণের দিকে মনোযোগ পুলিশের বেশি। যেমন ভূমিহীন কৃষকের ছেলে মেয়ে, বাসায় কাজকর্ম করে এমন বাবা মা এর সন্তান, এমনকি এতিম সন্তানদের সুযোগটা বেশি ছিল। যা সত্যিকারে সাধুবাদ পাবার মতো কার্যক্রম। সত্যিকারে মেধাবী বা গরীব প্রান্তিক জনগণ থেকে চাকরী পাওয়াটা আমাদের দেশে সোনার হরিণ হয়ে যাচ্ছিল। এই ভুলটা এবার পুলিশ প্রশাসন প্রমান করে দেখিয়েছেন।

তবে এতো কিছুর পরেও অশুভ প্রেতাত্মা গ্রাস করেছিল কিছু মানুষকে এবং তা শক্ত হাতে দমন করার চেষ্টাতে রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রতারক ও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে৷ এই চক্রের সদস্যরা দেশের অন্তত ১২ জেলায় চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে পুলিশ সদর দপ্তরের দাবী, কঠোর নজরদারীর কারণে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার আগেই অনেকে ধরা পড়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত সন্দেহে একজন এডি: এসপি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), ৫জন পরিদর্শক, ৮জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৭জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও ৮০জন কনস্টেবলকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি ও প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ তদন্ত শেষে এই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে। ইতিমধ্যে নিয়োগ প্রতারক চক্রের সদস্যের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা করা হয়েছে, এসব মামলায় এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪০ জন দালাল।

কিন্তু এখন জনগণের মাঝে আপেক্ষা চলে এসেছে যে, যদি সব সরকারি নিয়োগে এমন হতো। তাহলে সত্যিকারে দেশের চেহারা বদলে যেত। বহু আশা নিয়ে শিক্ষিত যুবকরা বসে আছেন যে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ার মতো হবে এস আই নিয়োগ প্রক্রিয়া। এবং পুলিশ বদনাম থেকে মুক্তি পাবে যে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা ছাড়া স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ চলছে বাংলাদেশ পুলিশে। স্বাধীনতার যুদ্ধে যেমন বাংলাদেশ পুলিশ সবার আগে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে নেমেছিল ঠিক সেভাবে এখান থেকে শুরু হবে দুর্নীতি, ঘুষ ছাড়া ১০০ ভাগ নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং দেশ পাবে সত্যিকারের মানুষ দেশ সামলে নেবার।