বরগুনায় আলোচিত রিফাত হত্যায় জড়িত মূল আসামিদের ধরতে আরও কিছু সময় চেয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার (৩০ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। গত ২৬ জুন (বুধবার) বরগুনা শহরের কলেজ সড়কে দিনদুপুরে স্ত্রীর আয়েশা আক্তারের সামনে স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপানো এবং স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে কুপিয়ে হত্যা করার দৃশ্য আমরা অনেক আগে দেখেছিলাম, বিশ্বজিৎ হত্যা। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার প্রক্রিয়াধীন। আমরা ওই একটি ঘটনা দেখেছিলাম। সেদিনও সারা বাংলাদেশের মানুষের মনে দাগ কেটেছিল। আজকে সেই রকম নৃশংস হত্যা।’
তিনি বলেন, ‘কোপানো, এটা কারো কাম্য নয়। যদি কোনো গাফিলতি এখানে থাকে... দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ছাড়াও আরও ঊর্ধ্বতন অফিসাররা সেখানে আছেন, কারো গাফিলতি যদি থাকে নিশ্চয়ই এটার ব্যবস্থা আমরা নেব।’ দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার কারণে এমন ঘটনা ঘটছে কি না -এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিচার বিভাগ সম্বন্ধে আমার কিছু বলার নেই। আমাদের কাজ যেটি আমরা সেটি করে দিচ্ছি। বিচার বিভাগ স্বাধীন, সেই বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’ এমন খুনের মানসিকতা একদিনে হয় না, মাদকের বিষয়টি আসছে -এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যতকিছু খুঁজতে থাকবেন, দেখবেন এর পেছনে মাদকের একটা শক্তি রয়েছে। মাদক যারা সেবন করেন তারা তাদের মনুষ্যত্ব হারান, তাদের বিবেক-বুদ্ধি সব লোপ পায়। তারা নানা রকম রোগশোকেও ভুগতে থাকেন। যারা এর ব্যবসা করেন তাদের অবৈধ ব্যবসা রক্ষা করতে হলে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করতে হয়। এই ইয়াং ছেলেরা কতখানি জড়িত হয়েছে, পত্রপত্রিকায় আমরা শুনছি, আমরা সেটা দেখছি। তারা যদি জড়িত হয়ে থাকে কিংবা আরও কারা আছে সবাইকে আমরা ধরব। মাদকে আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে সাড়শি অভিযান চালাচ্ছি এখানেও চালাব।’
রাজনৈতিক প্রশ্রয় পেয়ে তারা এমন অপরাধী হয়ে উঠেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসছে -এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক নেতাকে ছাড় দেই না। আমরা কাউকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ধরি না, তাকে অপরাধী হিসেবেই ধরি। কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় আমরা কাউকে দেই না।’ রিফাত হত্যায় এখন পর্যন্ত কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে -জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এজাহারভুক্ত ১২ জন, আমরা শনাক্ত করেছি ১৩ জন। আরও কয়েকজন আমাদের নেটের ভেতর চলে আসবে, তারা নানাভাবে সহযোগিতা করেছে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে চলে আসবে। এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এর মধ্যে এজহারভুক্ত তিনজন রয়েছেন।’ মূল আসামি ধরার ক্ষেত্রে পুলিশ কতটা তৎপর -এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা একটু সময় দেবেন তো আমাদের। আমার মনে হয় আমরা ধরে ফেলব।’ বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার পরিকল্পনাকারী গ্রুপের সদস্য মো. সাগরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশে তার কনস্টেবল হিসেবে চাকরি হওয়ার কথা রয়েছে -এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান খানিকটা মজা করে বলেন, ‘একটা ভালো কাজই করেছে, পুলিশের চাকরি খুঁজছে, এখন আর হবে না। এ ধরনের অপরাধ করলে নিয়োগ হবে না।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।