'নারীর গৌরবমাখা ইতিহাসকে সমৃদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে হবে'

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: শনিবার ২২শে জুন ২০১৯ ০৪:১৪ অপরাহ্ন
'নারীর গৌরবমাখা ইতিহাসকে সমৃদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে হবে'

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, প্রতিটি ক্ষেত্র বিশ্লেষণে নারীকে খুঁজে পাবেন। এই বিষয়গুলো অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি এর ওপরে বিশদ গবেষণার প্রয়োজন। গভীর গবেষণার মধ্য দিয়ে ওঠে আসবে ইতিহাসে অনেক নারী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, কিন্তু তাদের নাম হয়তো আমরা সেভাবে চিহ্নিত করতে পারিনি। সেগুলো আমাদেরকে অবশ্যই চিহ্নিত করতে হবে। শনিবার (২২ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ইতিহাসে নারী : দক্ষিণ এশিয়া প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ। সংগঠনটির এটি ৪৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক ইতিহাস সম্মেলন। পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (ইউজিসি) অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন যুগ্ম-সম্পাদক মো. আবদুর রহিম। স্পিকার বলেন, ‘ইতিহাসে নারী’ এই বিষয়টি যদি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করি তাহলে আমরা দেখি সময়ের পরিবর্তনে এবং কালের পরিবর্তন ও ধারবাহিকাতায় এ দুটোর মধ্য দিয়ে নারীর ভূমিকাও একই সাথে আবর্তিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায়ও এর ব্যতিক্রম নেই। তিনি বলেন, অনেক নারীর নাম হয়তো ইতিহাসের লেখনীতে সেভাবে খচিত হয়নি। যদিওবা তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। অনেক নারীও ইতিহাসের কালের আবর্তনে বিলীন হয়ে গেছেন। আবার অনেক নারী তাদের সাফল্যে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্তরে বাংলাদেশ স্টাডিজ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংযুক্ত করেছে। নারী শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে নারীরা যুদ্ধাহতদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন। ঘরে ঘরে মায়েরা মুক্তিযোদ্ধাদের আহার জুগিয়েছেন। ভাষা আন্দোলনেও নারীদের ভূমিকা ভুলার নয়। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তারা ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু সেই ইতিহাস অবহেলিতই থেকে গেছে। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ইতিহাস পরিষদ শুরু থেকে বাংলায় ইতিহাস চর্চায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়টি খুবই প্রাসঙ্গিক।

সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, আমাদের বর্তমান প্রজন্ম নানাবিধ কারণে ইতিহাসবিমূখ হয়ে যাচ্ছে। সেটা তাদের দোষ না। সেক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা গলদ রয়ে গেছে। এটি থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলকে বড় ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সহজ এবং সাবলীলভাবে ইতিহাসের বিষয়বস্তু সমূহকে সকলের কাছে বোধগম্য ও বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করে একটি ইতিহাস সচেতন জাতি বিনির্মাণ করা ছিল ইতিহাস পরিষদের মৌলিক দর্শন। সেই উদ্দেশ নিয়েই আজকের ৪৯তম সম্মেলন। সম্মেলনের যে বক্তব্য আসবে তা বিশ্ব সভ্যতার জন্য নতুন মাত্রা আসবে বলে মনে করি।

ইনিউজ ৭১/এম.আর