
প্রকাশ: ৩১ মে ২০১৯, ২১:২৩

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর বাইরে তদন্তে আরও ৮৯ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। নাম-ঠিকানা সঠিক পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও সম্পূরক অভিযোগপত্র দেবে সংস্থাটি। সিআইডির তালিকা ধরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জড়িতদের মধ্যে অন্তত ২১ জন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মী। ছাত্রলীগের জড়িত ২১ জনের মধ্যে ১৮ জন বিভিন্ন কমিটির পদধারী নেতা ছিলেন। আর তিনজন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। দেড় বছরের দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলার এই অভিযোগপত্র প্রস্তুত করেছে সিআইডি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থার প্রধান মোহা. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চক্রের প্রধানসহ ৪৭ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। এঁদের একজন ছাড়া সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ৭৮ জন পলাতক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, ২০০৬ সালের ৬৩ ধারা ও পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন, ১৯৮০ সালের ৪/৯(খ) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ২০১১ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এই চক্রের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শুরুর আগে প্রেস থেকে ছাপা প্রশ্ন নিয়ে প্রথমে তারা মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর পাঠাত। পরে তারা ডিজিটাল যন্ত্রাংশের ব্যবহার বাড়ায়। ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, অন্তত দুটো বিসিএস পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির প্রশ্নপত্র ফাঁসেও এই চক্র সক্রিয় ছিল। চক্রের মূল নেতারা অঢেল অবৈধ অর্থসম্পদের মালিক হন। এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে ইতিমধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মানি লন্ডারিং মামলাও করেছে সিআইডি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১ জন ছাত্রী। গ্রেপ্তার রয়েছেন ২১ জন। বাকি ৬৬ জনের মধ্যে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ অভিযোগ ওঠার পর গা ঢাকা দিয়েছেন। ৮৭ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন চক্রের সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া এবং জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এই ৮৭ জনের মধ্যে ১৫ জনকে বহিষ্কার করেছিল। অভিযুক্ত হিসেবে অন্য যাঁদের নাম সিআইডির তদন্তে এসেছে, তাঁদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান গতকাল বলেছেন, অভিযোগপত্র হাতে পেলে শৃঙ্খলা পরিষদের সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর