বরিশালে 'ফনী’র প্রভাবে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
এম. কে. রানা - বার্তা প্রধান ইনিউজ৭১
প্রকাশিত: শনিবার ৪ঠা মে ২০১৯ ০৭:০৭ অপরাহ্ন
বরিশালে 'ফনী’র প্রভাবে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের

বড় ধরনের কোন দুর্যোগ ছাড়াই কেটে গেছে ঘূর্নিঝড় ‘ফনী’র প্রভাব। ঘূর্ণিঝড় ফনি আঘাত হানলেও প্রাণহানি না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অ‌জিয়র রহমান। আজ শ‌নিবার দুপু‌রে জেলা প্রশাসকের স‌ম্মেলন ক‌ক্ষে সংবাদ স‌ম্মেল‌নে তিনি এই স্বস্তি প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে ঘূর্ণিঝড় ফনির আঘাতে বরিশাল জেলার ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরা হয়। গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর না থাকলেও ১৫শ’ বসতবা‌ড়ির ক্ষ‌তি হ‌য়ে‌ছে এবং জেলায় সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে কৃষকের। 

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, ৯ হাজার হেক্টর জমির ফস‌ল বিনষ্ট হয়ে গেছে। এর ম‌ধ্যে ৩ হাজার ৬৮০ হেক্টর বোরো ধান, ১ হাজার ৫১০ হেক্টর মুগ ডাল, ১ হাজার ৪৬৬ হেক্টর মরিচ, ২৫০ হেক্টর তিল, ৯৪০ হেক্টর সবজি, ১২০ হেক্টর ভুট্টা, ৫৩৫ হেক্টর পান ও ৫৫২ হেক্টর সয়াবিন রয়েছে। 

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সতর্ক বার্তা পেয়ে আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। আল্লাহ রহমত করেছেন বলেই বরিশালে কোনো প্রাণহানি হয়নি।’ এখনো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া রয়েছে। এজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। ফণীর আঘাতে সাতলা বাগধা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের শিবপুর পয়েন্টে ২০ মিটার এবং বরিশাল নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত নদী ভাঙনরোধ বাঁধে ফাটল দেখা দিলেও তাৎক্ষণিকভাবে তা মেরামত করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে দুর্যোগের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে থেকে আমাদের কাজ করতে বলেছেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বরিশালে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব হয়েছে। 

ফনির বিপদ কেটে গেলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকায় শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে পরবর্তী জোয়ার পর্যন্ত নদীতে খেয়া নৌকাসহ ছোট নৌ যান শতভাগ বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন বরিশাল বিআইডবিøউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার। তিনি বলেন, ‘নদীতে বর্তমানে স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৩ ফুট পানি রয়েছে। আসন্ন ভাটায় নদীর পানি অনেকটাই হ্রাস পাবে। সে সময় পানি নেমে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি। এজন্য বিপদ এড়াতে নদীতে কোনো ধরনের নৌ যান না চালানোর অনুরোধ করা হয়েছে।’ 

জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, বরিশালের ৩৩১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩১ হাজার ৬২১ নারী ও শিশুসহ ৫০ হাজার ৫৬৫ মানুষ আশ্রয় নেন। সকাল থেকে তারা আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে গেছেন। তবে খুলনা থেকে ইতোমধ্যে নৌ বাহিনীর তিস্তা ও মেঘনা নামের দুটি জাহাজ ৫শ’ বস্তা ত্রাণ নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরা লে এই ত্রাণ বিতরণ করা হবে।’

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব