প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১৫:২৯
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষ হয়েছে। বৈঠক প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয় এবং এতে একটি চুক্তি ও চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। এটি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে পাকিস্তানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ে প্রথম বৈঠক হিসেবে গুরুত্ব বহন করে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার নিশ্চিত করেন, বৈঠকে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও এমওইউ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে। চুক্তির মধ্যে রয়েছে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ।
সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের মধ্যে আছে দুই দেশের বাণিজ্য বিষয়ক যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, সংস্কৃতি বিনিময়, ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি। এছাড়া বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের (আইএসএসআই) মধ্যে সহযোগিতা স্থাপনের কথাও আলোচিত হয়েছে।
বৈঠকের সময় ৭১ সালের গণহত্যার ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইসহাক দার বলেন, এটি কোনো অমীমাংসিত বিষয় নয়। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৪ সালে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ও ২০০২ সালে পারভেজ মোশাররফের সফরের সময় এই বিষয়ের সমাধান হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের নির্দেশ দেন, “আপনাদের হৃদয় পরিষ্কার করুন এবং সামনের দিকে এগিয়ে যান।”
এর আগে, শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব। একইদিন বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানি মন্ত্রী।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে আরও জোরদার করার একটি নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করবে।
এই বৈঠক বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ধরা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে আরও কার্যকরী ও ফলপ্রসূ সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হবে।