প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১৫:৩
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজধানীসহ সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। রোববার (২০ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। সভায় ঢাকার সব জেলা প্রশাসক, র্যাব, সেনাবাহিনী ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভালো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা এবং সরকারের নির্দেশনায় সহিংসতা দমন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। তিনি গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রভাবিত বলে উল্লেখ করে বলেন, সেখানে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে এবং শিগগির ১৪৪ ধারাও প্রত্যাহার করা হবে।
তিনি বলেন, হরতাল ও রাজনৈতিক আন্দোলনগুলো আগের তুলনায় অনেক শান্তিপূর্ণ হয়েছে। জনগণের ভোগান্তি কমেছে এবং সহনশীলতা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে গণতান্ত্রিক চর্চা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করা হচ্ছে, তবে সহিংসতা ও অশালীনতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সত্য বলার চর্চা গণতন্ত্রের প্রধান ভিত্তি। মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্দোষ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে দিকেও কর্তৃপক্ষ নজর রাখছে। তিনি জানান, গোপালগঞ্জে শিশুদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই এবং আগের মতো গণগ্রেপ্তার নয়, বরং শুধুমাত্র প্রকৃত অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থা রাখা উচিত। যথাযথ প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তিনি জানান, নির্বাচনকে ঘিরে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলো ইতোমধ্যেই কার্যকর প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সময়মতো তা বাস্তবায়ন হবে।
সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রতিটি পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
তিনি আরও জানান, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা, যেখানে সকল নাগরিক নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার পাবে। এই লক্ষ্য পূরণে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক মহলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বৈঠককে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। দেশের বর্তমান অস্থিরতা ও আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ধরনের পদক্ষেপকে অনেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন।