বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর খবর প্রচারের প্রবণতা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান ‘রিউমর স্ক্যানার’-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গত আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যম ১৩টি ভুয়া খবর প্রকাশ করেছে।
৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের বিষয়ে একের পর এক ভিত্তিহীন খবর প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানারের তথ্যমতে, এই গুজবগুলোতে শেখ হাসিনার নামে ভুয়া চিঠি, ড. ইউনূসের অসুস্থতার মিথ্যা খবর, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভিত্তিহীন দাবি, এবং ধর্মীয় উস্কানিমূলক তথ্য রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু গুজব আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে দাবি করা হয়, ক্ষমতা হারানোর পর শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। তবে এই চিঠিটি ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। একইভাবে, ড. ইউনূসকে আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার খবরও অসত্য।
এছাড়া, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক হামলার ভুয়া ভিডিও প্রচার করে কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম। একটি ভিডিওতে দেখানো হয়, মুসলিমরা হিন্দু মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও।
এ ধরনের ভুয়া খবরের তালিকায় ভারতের জনপ্রিয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলা, হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজসহ আরও অনেকের নাম উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের বিভ্রান্তি উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
বাংলাদেশ সরকার এই ধরনের গুজব মোকাবিলায় কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, গুজব প্রতিরোধে উভয় দেশের গণমাধ্যম এবং সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।